নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর কদমতলীর একটি বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে ঢুকে বাড়িওয়ালীকে জিম্মি করে এবং ছুরিকাঘাতে স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেয়ার সময় ৪ প্রতারককে আটক করেছে এলাকাবাসী। গণধোলাইয়ের পর তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। আর তাদের ছুরিকাঘাতে আহত বাড়িওয়ালী রিনা আক্তারকে (৪৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কদমতলী শহিদনগর মেডিকেল রোডের একটি দুতলা বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে। আটককৃতরা হলেন, ইব্রাহিম (২৭), আক্তার (২৮), আনোয়ার (৩২) ও আলমগীর (২৮)।
ভুক্তভোগী রিনা আক্তারের ছেলে মো. জাকির হোসেন জানান, তারা নিজেদের দুতলা বাড়িটির ২য় তলায় থাকেন। তার বাবা শহিদ মিয়া কুয়েত প্রবাসী। গতমাসের ২০ তারিখ আটক ৪ প্রতারকের ভিতর দুইজন ওই বাড়িটির নিচ তলায় বাসা ভাড়া নেয়ার জন্য আসে। সেইদিন বাসা দেখে ১ হাজার টাকা এডভান্স দিয়ে যায়। আজ সকালে তারা সামান্য কিছু মালামাল নিয়ে ২ জন বাসায় উঠেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসা থেকে জাকির হোসেন বাইরে চলে গেলে ওই প্রতারক চক্র তার মা রিনা আক্তারকে নিচের ওই রুমে ডেকে নেন। এরপর রুমের দরজা বন্ধ করে ভিতরে দুইজন তাকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে।
তখন তিনি চিৎকার শুরু করলে তার মুখে স্কসটেপ দিয়ে আটকে ফেলে। আর চক্রের বাকি দুইজন রুমের বাইরে পাহারায় ছিলো। তখন তার ছোট ভাই জাহিদ চিৎকার শুনে নিচ তলায় নেমে মাকে খোঁজ করছিলেন। রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ওই দুইজনকে জিজ্ঞাসা করলে তারা দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তখন ওই রুমে ঢুকে দেখেন দুই জনের হাতে ধারালো অস্ত্র আর তার মায়ের গলা থেকে রক্ত ঝড়ছে। তিনি ভিতরে ঢুকাতে সঙ্গে সঙ্গে রুমে থাকা দুইজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে একজনকে সে ঝাপটে ধরে ফেলে। এরপর তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশী ও আশপাশের লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা ৩ জনকেই ধরে ফেলে।
তিনি আরও জানান, আহত অবস্থায় তার মাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার গলায় ৬টি সেলাই করে। এছাড়া বাম হাতের দুই আঙুলেও কেটে গেছে। চিকিৎসা শেষে তারা কদমতলী থানায় যান মামলা দায়ের করার জন্য।
এদিকে কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন জানান, বাসা ভাড়ার কথা বলে বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে এই চক্র টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেয়। আজ একই ধরনের ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাদেরকে আটক করে গণধোলাই দেয়।
খবর পেয়ে তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল থেকে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএসডি/আরপি