অর্থনীতি ডেস্ক:
করোনা মহামারির মধ্যেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছেন। চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) প্রবাসীরা ৩৮০ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের আট দেশ থেকে এসেছে মোট রেমিট্যান্সের ৫৬ শতাংশ বা ২০৫ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা-প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে ৫টি হলো মধ্যপ্রাচ্যের।
অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বরাবরের মতো সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। দেশটি থাকা প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৮৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের ২৪ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অন্য দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, ওমান, মালয়েশিয়া, ইতালি ও সিঙ্গাপুর।
চলতি অর্থবছরে দুই মাসে দ্বিতীয় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৬ কোটি ডলার। তৃতীয় মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। চতুর্থে থাকা যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ৩০ কোটি ৫২ লাখ ডলার। কুয়েত থেকে এসেছে ৩০ কোটি ১৪ লাখ ডলার। কাতার ২৪ কোটি ৬৫ লাখ, ওমান ২০ কোটি ৮৮ লাখ, মালয়েশিয়া ২০ কোটি ৭০ লাখ, ইতালি ১৬ কোটি ৮১ লাখ ও সিঙ্গাপুর থেকে ৭ কোটি ৫৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছে প্রবাসীরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি বাংলাদেশে। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। তারও আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।
২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এছাড়া ঈদ ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেওয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।
বিএসডি/আইপি