অর্থনীতি ডেস্ক:
করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি সচল হচ্ছে শিল্প কারখানা। ফলে এ খাতে বাড়ছে ঋণের চাহিদা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে এ খাতে মোট এক লাখ ৭ হাজার ২৪১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ হয়েছে। ২০২০ সালে একই সময় বিতরণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৩২ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা বা ৪৪ দশমিক ৪২ শতাংশ।
পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত বছর জুনে দেশে করোনার সংক্রমণ ও প্রাদুর্ভাবের কারণে শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ কমেছিল, তবে সরকারের বিশেষ প্রণোদনার ঋণ প্রবাহ বাড়ায় সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে বেসরকারি খাতের ঋণ বিতরণে তেমন উন্নতি হয়নি। গত জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ হয়েছে মোট এক লাখ ৯৮ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। এ হিসাবে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৩২ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বিতরণের পাশাপাশি আদায় পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে।
হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন সময়ে শিল্পঋণ আদায় হয়েছে ৮২ হাজার ২২১ কোটি টাকা। ২০২০ সালে এপ্রিল-জুন সময়ে আদায় হয়েছিল ৬৪ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তুলনায় এবছর আদায় বেড়েছে ২৮ শতাংশের বেশি। ঋণ আদায় বাড়লেও মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণও বেড়েছে। এ বছর দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রায় ১৫ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বেড়েছে ৯৫ হাজার ৭৭৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা উঠেছে।
এছাড়া চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) শিল্পঋণ আদায় হয়েছে এক লাখ ৬৭ হাজার ১৭ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে আদায়ের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৪২ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে আদায় বেড়েছে ২৪ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা। আর বকেয়া ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ১৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা।
প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় এপ্রিল-জুন সময়ে চলতি মূলধন ঋণ ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে ৮৭ হাজার ৮১১ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও বৃহৎ শিল্প ছাড়া মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ বিতরণ কমেছে। মাঝারি শিল্পে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ কমে সাত হাজার ৭৯৬ কোটি টাকায় নেমেছে। ক্ষুদ্র শিল্পে শূন্য দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে ছয় হাজার ৫৯৪ কোটি টাকায় নেমেছে। তবে বড় শিল্পে ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়ে ৭৩ হাজার ৪২০ কোটি টাকা হয়েছে।
এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, মাহামারি পরিস্থিতি কিছু উন্নতি হওয়ায় শিল্প ঋণের চাহিদা বেড়েছে। তবে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। করোনার তৃতীয় ধাক্কা আসতে পারে। আমাদের দেশে অধিকাংশ লোক ভ্যাকসিনের আওতায়ও আসেনি। তবে আগামীতে কি অবস্থা হবে এখনই বলা যাচ্ছে না।
বিএসডি/আইপি