স্পোর্টস ডেস্ক
ছিনতাই! ম্যানচেস্টার সিটির এমন জয়ের জন্য একটা শব্দই যথেষ্ট যেন। শুরুর অর্ধে আর্সেনাল সিটি কোচ পেপ গার্দিওলারই বিষে তার দলকে কোণঠাসা করে যে! সেই থেকে বেরিয়ে এসে জয়, তাও শেষ সময়ের গোলে, ২-১ ব্যবধানে! ‘ছিনতাই’ নয়তো কী?
আর্সেনাল অবশ্য আরও এক কারণে এই এক হারকে ‘ছিনতাই’ দাবি করে বসতে পারে। শুরুর অর্ধে যে একটা নিশ্চিত পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দিয়েছিলেন রেফারি! তবে তাতে সিটির বয়েই গেলো! এমিরেটসে আর্সেনালের ঝাপটা সামলে শেষ সময়ের গোলে দারুণ এক জয়, তাতে বছরটা দারুণভাবেই শুরু করতে পারলো দলটি। টানা জয়ের ধারাটাও টেনে নিয়ে গেল ১১ ম্যাচে।
আর্সেনাল ভক্তরা অবশ্য অন্য এক কারণেও আফসোস করতে পারেন। করোনায় জেরবার ছিল দল। কোচ মিকেল আর্তেতা ছিলেন না ডাগ আউটে, করছিলেন ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। বলেই ফেলেছিলেন, অস্থির পায়চারির জন্য বিশাল এক কামরা দরকার তার। ম্যাচের গতিপ্রকৃতি যেভাবে এগিয়েছে, তাতে তিনি বোধ হয় অস্থির পায়চারি করেওছিলেন।
তবে তার দল যেভাবে শুরুটা করেছিল, তাতে তার গর্বই হওয়ার কথা। শুরুর এক ঘণ্টায় দারুণ আগ্রাসি ফুটবল খেলেছে দলটি, গতি নিয়ন্ত্রণ করেছে, বিটউইন দ্য লাইন পাসে রক্ষণ ভেঙেছে। এমন কিছু সিটির ফুটবলেই দেখা যায়, সিটির বিপক্ষে সেই খেলাটা খেলে তাদের ওপরই আজ ছড়ি ঘোরাচ্ছিল দলটি। সিটির বিপক্ষে শেষ নয় প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচেই হেরেছে দলটি, তবে গানারদের শুরুর অর্ধের পারফর্ম্যান্স তাতে বিশ্বাস করার উপায়ই রাখেনি।
৩১ মিনিটে আক্রমণে উঠে আসা উইংব্যাক কিয়েরান টিয়ের্নির পাস থেকে গোল করেন বুকায়ো সাকা। তা ছিল শুরুর আধঘণ্টায় সিটির ওপর আর্সেনালের দারুণ আধিপত্য বিস্তারের ফসল।
এর দশম মিনিটে একটুর জন্য পেনাল্টিটা পায়নি আর্সেনাল। প্রতি আক্রমণে বক্সে চলে আসা মার্টিন ওডেগার্ডকে রুখে দেন সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এডারসন। তবে আর্সেনালের জোরালো পেনাল্টি আবেদনে কান দেননি তিনি, এমনকি ভিএআরে দেখার প্রয়োজনও বোধ করেননি তিনি। পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, বল নয়, ওডেগার্ডের পায়েই ছোঁয়া লেগেছিল এডারসনের।
বিরতির পর এমন এক পেনাল্টিতেই সমতা ফেরায় সিটি। ৫৭ মিনিটে বিপদসীমায় চলে আসা বের্নার্দো সিলভাকে অবৈধভাবে রুখে দেন মিডফিল্ডার গ্রানিট শাকা। শুরুতে পেনাল্টি না দিলেও ভিএআর দেখে এসে সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন তিনি। পেনাল্টি থেকে দলকে সমতায় আনেন রিয়াদ মাহরেজ।
সেই গোলেও অবশ্য খেলার ধারা বদলায়নি। সিটি গোল হজমের দুয়ারে চলে গিয়েছিল পরের মিনিটেই। মার্টিনেল্লির শটটা শেষমেশ বারপোস্টে প্রতিহত হয়, হাঁফ ছেড়ে বাঁচে সিটি। এর এক মিনিট পর গ্যাব্রিয়েলের অহেতুক দ্বিতীয় হলুদ কার্ডই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শুরুর এক ঘণ্টায় কোণঠাসা সিটি একজন বাড়তি খেলোয়াড়ের ফায়দা তোলে ভালোভাবেই। বলের দখল ধরে রেখে মুহুর্মুহু আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত রাখে প্রতিপক্ষ রক্ষণকে।
গোলের দেখা অবশ্য মিলছিল না। তাতে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উদ্বেগও বাড়ছিল সিটি শিবিরে। শেষমেশ যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে দলটিকে সেই উদ্বেগ থেকে রেহাই দেন রদ্রি এর্নান্দেজ। কেভিন ডি ব্রুইনার পাস থেকে নিচু এক শটে আর্সেনাল গোলরক্ষক অ্যারন রামসডেলকে ফাঁকি দেন তিনি। তাতেই সিটির টানা ১১টি প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। এর ফলে ২১ ম্যাচে ১৭ জয় ও দুই ড্রয়ে ৫৩ পয়েন্ট অর্জন করল দলটি, আছে লিগের শীর্ষে। এক ম্যাচ কম খেলে চেলসির অর্জন ৪২ পয়েন্ট।
বিএসডি/এসএ