নিজস্ব প্রতিবেদক:
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই। তারা পেছন দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথে ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ জন্য তারা বিভিন্ন সময়ে নানারকম কৌশল গ্রহণ করছে। এক সময় তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছিল। তাদের প্রধান লক্ষ্য শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করা। এই দেশে সংবিধান মতে নিরপেক্ষভাবে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ যাদের ম্যান্ডেট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে। আর কোনো ষড়যন্ত্র হলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের সকল ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান করছেন। অসহায় মানুষদের বিধবাভাতা, বয়স্কভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা ও গর্ভবতীভাতা দিচ্ছেন। স্কুলের ছাত্রীদের উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। বছরের শুরুতে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। দেশের সকল স্তরের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে অনেক কাঠখড়ি পোড়াতে হয়েছে। ২১ বার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছেন। ঈশ্বরদী থেকেও তিনি হামলার শিকার হয়েছিলেন। তার ট্রেন বহরে বৃষ্টির মত গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল।
আব্দুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশ পেরিয়ে বিশ্বনেত্রী। তিনি বিশ্বের একজন সৎ প্রধানমন্ত্রী। তার কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া নেই। তিনি শুধু মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। শেখ হাসিনা অতি সাধারণ জীবনযাপন করেন। তার কোনো ভোগ-বিলাসিতা নেই। এভাবে আমাদের প্রত্যেক স্তরের নেতাকর্মীদের তৈরি করতে হবে। দলে কোনো চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীর স্থান নেই।
ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি ফরিদুল আলম ফরিদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স।
সম্মেলনে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, পাবনা-সিরাজগঞ্জে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে দুটি প্যানেলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোট চারজনের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এক প্যানেলে রয়েছেন ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র ইছাহক আলী মালিথা সভাপতি পদে এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সাকিবুর রহমান কনক শরীফ সাধারণ সম্পাদক পদে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন।
অপর প্যানেলে সভাপতি পদে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১১ জুন ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। এ সম্মেলনে আনিসুন্নবী বিশ্বাস সভাপতি ও মকলেছুর রহমান মিন্টু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর মধ্যে আনিসুন্নবী বিশ্বাস মারা যাওয়ায় কমিটির সহ-সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাস দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
বিএসডি/আইপি