স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের সনদ প্রতি ৬ টাকা করে স্বাক্ষর ভাতা দিতে হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর সনদ স্বাক্ষরের জন্য এমন ভাতা চালু করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য। এটি চালু করে দুই মেয়াদে শুধু সনদ স্বাক্ষর বাবদই ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ভাতা নিয়েছেন তিনি।
বাউবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ মাননানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বরাবর ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শফি উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের হটলাইন-১০৬-এ আসা অভিযোগ ও লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক থেকে অভিযোগটি খতিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বলা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, ২০১৩ সালের মার্চে বাউবির উপাচার্য পদে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এমএ মাননান। দায়িত্ব গ্রহণের পর সনদ স্বাক্ষরের জন্য একটি ভাতা চালু করেন তিনি। মাননানের বিরুদ্ধে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের সনদপ্রতি ৬ টাকা করে স্বাক্ষর ভাতা নিয়েছেন তিনি। দুই মেয়াদে শুধু সনদ স্বাক্ষর বাবদই ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ভাতা নিয়েছেন এ উপাচার্য। এজন্য একটি নীতিমালাও প্রণয়ন করা হয়।
নীতমালা অনুযায়ী, সুবিধাপ্রাপ্যরা ৩০ শতাংশ সনদ নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে স্বাক্ষর করবেন। আর ৭০ শতাংশ সনদ স্বাক্ষর করার বিপরীতে ভাতা গ্রহণ করবেন।
সনদে স্বাক্ষর করা বাবদ ভাতা গ্রহণের বিষয়টিকে খুবই স্বাভাবিক ও যৌক্তিক বলে দাবি করেন অধ্যাপক এম এ মাননান। এ বিষয়ে অভিযোগ ওঠার পর গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ২০১৩ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখলাম পাঁচ লাখের বেশি সনদ স্বাক্ষরের জন্য পড়ে রয়েছে। এছাড়া প্রতি শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রি পর্যায়ে প্রায় চার লাখ সনদে সই করতে হয়। কোনো উপাচার্যের পক্ষে অফিশিয়াল কাজ করে এত সনদে সই করা সম্ভব নয়। সনদ নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের ওপরও বেশি চাপ যাচ্ছে। এ কারণে ভাতার ব্যবস্থা।
যদিও অন্য কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এমন কোনো ভাতা গ্রহণের তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধরনের কোনো রেওয়াজ চালু নেই বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
বিএসডি/এমএম