প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও লেখক আনিসুল হক বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলাটি প্রত্যাহার করা হোক।
জামিনের আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে আনিসুল হক বলেন, রোজিনা ইসলামের জামিন হয়েছে। এটা খুব খুশির খবর। তিনি বলেন, প্রথম আলো সব সময়ই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনিভাবে রোজিনা ইসলামের মামলার বিষয়টি মোকাবিলা করা হবে।
আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিনের আদেশ হয়। পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তিনি জামিন পান।
আনিসুল হক আরও বলেন, সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির জন্য প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সব সংবাদকর্মীর সংহতি ছিল অভূতপূর্ব। তিনি বলেন, সংবাদকর্মী, সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো আন্দোলন করেছে। রোদে, বৃষ্টিতে তাঁরা সবাই পথে নেমেছেন। কেউ পথ থেকে ফিরে যাননি। তিনি সবাইকে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রথম আলো সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কখনোই আদালতের ওপর থেকে আমরা আস্থা হারাই না।’
গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। তবে আদালত সেদিন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য উপস্থাপন ও জামিন বিষয়ে আজ আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়।
শুনানিতে রোজিনা ইসলামের আইনজীবীরা বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, সৃজিত ও উদ্দেশ্যমূলক। জামিন পাওয়ার অধিকার তিনি সংরক্ষণ করেন। এটা তাঁর প্রাপ্য।
শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৮ মে রোজিনা ইসলামকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ তাঁকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আর জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখেন। এই আদেশের পর রোজিনা ইসলামকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠানো হয়।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবিতে কয়েক দিন ধরে প্রতিবাদ ও আন্দোলন চলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিবাদ হয়েছে।