মিয়ানমারের বাগো শহরে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়েছে। গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত চালানো রাতভর অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষের এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে প্রাথমিক ভাবে নিহতের সংখ্যা ৬০ বলে জানানো হলেও রোববার সকালে এক প্রতিবেদনে এই সংখ্যা ৮০ জনেরও বেশি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শনিবার সকালে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছিল, মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৯১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বাগো শহরে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর রাতভর চালানো অভিযানে কমপক্ষে ৬০ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
রাতভর চালানো এই অভিযানে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী প্রচলিত অস্ত্রের পাশাপাশি মেশিনগান, গ্রেনেড এবং মর্টার শেল ব্যবহার করে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তারা বলছেন, সেনা সদস্যরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছেন এবং নড়াচড়া করতে দেখেছেন এমন যেকোন কিছুতে গুলিবর্ষণ করেছেন।
ইয়ে তুত নামে বাগো শহরের একজন বিক্ষোভকারী দেশটির গণমাধ্যম মিয়ানমার নাউ’কে বলেন, ‘তারা গণহত্যা চালিয়েছে। চোখের সামনে পড়া প্রতিটি মানুষের উদ্দেশে তারা গুলিবর্ষণ করেছে।’
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে। সামরিক বাহিনী এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়ে দেয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই মাস আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন থেকে প্রায় প্রত্যেকদিন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন।