চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন না দেওয়ায় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির বৈঠকে ভারত থেকে চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন না আসার বিষয়ে আলোচনাকালে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি এই প্রস্তাব করা হয়। পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আনতে প্রচেষ্টা জোরদারের সুপারিশ করা হয়েছে।
রোববার (৯ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবে মিল্লাত ও কাজী নাবিল আহমেদ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সংসদীয় কমিটি একাধিক সোর্স থেকে ভ্যাকসিন আনার ব্যবস্থা করতে বলেছিল। কিন্তু কেন একটা সোর্স থেকে আনা হলো- সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে তারা এখন একের অধিক সোর্স থেকে ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করছে। ভারত থেকেও আশা করছি জুলাইয়ে পাবে। আমেরিকা থেকে পাওয়ার চেষ্টা চলছে। রাশিয়া ও চীন থেকে আনার চেষ্টা তো করছেই।’
তিনি বলেন, ‘সেকেন্ড ডোজ কমপ্লিট করার জন্য অ্যাস্ট্রেজেনেকার যে ভ্যাকসিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত আছে, সেটা আনা যায় কিনা, সেই উদ্যোগ দ্রুততার সঙ্গে নিতে বলেছি। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে বলেছি।’
কমিটির সভাপতি বলেন, ‘করোনা ভ্যাকসিন কেন আনা যাচ্ছে না?- এ সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে। আমরা বলেছি, শুধু চেষ্টা করলে হবে না। ভ্যাকসিন আনতে হবে। না হলে দেশ সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে। যারা এক ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয়বার দিতে হবে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাইয়ের দিকে ভারত থেকে ভ্যাকসিন আসবে। যুক্তরাষ্ট্রে কিছু ভ্যাকসিন অতিরিক্ত আছে। তারা সেখান থেকেও আনার চেষ্টা করছে। এছাড়া চীন ও রাশিয়া থেকে ভ্যাকসিন আসবে। এতে সমস্যার সমাধান হবে।’
ভারতের ভাইরাসের ধরন বাংলাদেশে পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে লকডাউন শক্তিশালী করতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে বিজিবিকে শক্তিশালী টহল জোরদার করতে বলা হয়েছে।’
কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শেষে মে মাসের শেষ সপ্তাহে সংসদীয় কমিটিকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া ইরাকের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং দেশটিতে কর্মরত বাংলাদেশি মানবসম্পদকে সবধরনের সহযোগিতা প্রদানের সুপারিশ করা হয়।