সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বাহারা ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানের হাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ সময় অফিস কক্ষে ঢুকে চেয়ার টেবিল,আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিড়ে ফেলেন। তাকে শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক এ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
আহত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার নাম হলো মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূম। তিনি শাল্লা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসএই পদে কর্মরত রয়েছেন। মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূম গত ২০ জানুয়ারী ঘটনার পরপরই বাহাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টুকে আসামী করে শাল্লা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,সম্প্রতি ৫ম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে শাল্লা উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বৃহস্পতিবার (২০জানুয়ারী) সন্ধ্যা ৬টায় শাল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে এসএই মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূমের বিশ্রাম কক্ষে ঢুকে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের জন্য ২০টি পিআইসি দাবী করেন। এ সময় ঐ কর্মকর্তা এতগুলো পিআইসি একজনকে দেয়া আইন পরিপন্থি বলে জানালে চেয়ারম্যান তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ও পরনের কাপড়-চোপড় টানা-হেছড়া করে তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় অফিস কক্ষের চেয়ার টেবিল আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিড়ে ফেলেন। চেয়ারম্যান কক্ষ থেকে বের হয়ে উন্মাদের মতো আচরণ করে এবং পথচারীদেরকে মারপিট করেন তিনি।
অভিযোগসূত্রে আরো জানা যায়, চেয়ারম্যান বিশ^জিৎ চৌধুরী নান্টু হামলা করার আগে তিনি মাদক সেবন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় চেয়ারম্যান মাতাল ছিলেন বলেন জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
হাওরের কৃষকদের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষার জন্য সরকার চলিত বছর শাল্লা উপজেলায় মোট ১৩৬টি হাওররক্ষা বাঁধের কাজ বাস্তবায়নের জন্য পিআইসি গঠনের কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে থেকে চেয়ারম্যান বিশ^জিৎ চৌধুরী নান্টু ২০টি পিআইসির কাজ নিজের বলয়ে নিতে এসএই মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূমকে দীর্ষদিন থেকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন । সর্বশেষ কাজ না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান নিজে ওই কর্মকর্তার অফিসকক্ষে ঢুকে তার উপর হামলা চালান।
এ ব্যাপারে হামলায় গুরুতর আহত পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসএই মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে চেয়ারম্যান কর্তৃক তার উপর হামলা ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান নান্টু তাকে ২০টি পিআইসি দেয়ার জন্য নানানভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। আমি নীতিমালা ভঙ্গ করে তো আর একজনকে এতগুলো পিআইসি দিতে পারি না। তার দাবি মিটাতে না পারায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর হামলা চালিয়ে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এ ব্যাপারে হামলাকারী নব-নির্বাচিত ৩নং বাহারা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুর মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
বিএসডি/ এলএল