নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানিকগঞ্জে আলোচিত সুপ্রিয়া হত্যা মামলায় শ্বশুর-শাশুড়িসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে বেকসুর খালাস পেয়েছেন সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন সরকার (২৭)।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। তবে অন্য আসামিরা জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- সুপ্রিয়া সাহার শ্বশুর দিলীপ সরকার (৬০), শাশুড়ি গীতা সরকার (৪৫) ও মানিকগঞ্জ পূর্বদাশড়া গ্রামের দীলিপ রায়ের ছেলে মহাদেব রায় (২৭)।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো-পূর্বদাশড়া গ্রামের রবীদ্র সাহার ছেলে রঞ্জিত সাহা (২৬), একই গ্রামের অরুণ পালের ছেলে বিষ্ণু পাল (২৬) ও একই গ্রামের রবি ঘোষের ছেলে রঞ্জিত ঘোষ (২৭)।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মানিকগঞ্জ পূর্বদাশড়া গ্রামের সুকুমার সাহা মেয়ে সুপ্রিয়া সাহার সঙ্গে একই গ্রামের দিলীপ সরকারের ছেলে দিপাঞ্জন সরকারের বিয়ে হয়।
সুপ্রিয়া মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স (বাংলা) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।
পারিবারিক কলহের জের ধরে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে একই সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে সুপ্রিয়াকে হত্যা করা হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টি ডাকাতি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিয়ার বাবা সুকুমার সাহা বাদী হয়ে সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন সরকার, শ্বশুর দিলীপ সরকার ও শাশুড়ি গীতা সরকারকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন মানিকগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক মাসুদ মুন্সি।
তদন্ত শেষে আলোচিত এ মামলায় আসামি করা হয় আরও চারজনকে।
২০১৬ সালে ২৯ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদ মুন্সি সুপ্রিয়া হত্যা মামলায় সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলায় ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
মামলার রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী সুপ্রিয়ার বাবা সুকুমার সাহা জানান, তিনি আসামি করেছেন সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন, শ্বশুর দিলীপ সরকার ও শাশুড়ি গীতা সরকারকে। পুলিশ তদন্ত করে আরও চারজনের নামে চার্জশিটে দেন। কিন্তু অন্য আসামিদের শাস্তি হলে মূল আসামি দিপাঞ্জনের শাস্তি হয়নি। এটি অত্যন্ত কষ্টকর। এরা জামিন নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি আব্দুস সালাম ও এপিপি মথুর নাথ সরকার এবং আসামিপক্ষে আব্দুর রহমান, নজরুল ইসলাম বাদশা।
বিএসডি/এসএফ