আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে দেশটির আদালতের একটি রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মাইকেল বেশেলেট।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে উস্কানি দেওয়া ও করোনা বিধিনিষেধ ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি আদালত।
এ ব্যাপারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মাইকেল বেশেলেট সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত এই রায়ের মাধ্যমে শুধু যে ব্যাপকভাবে তার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাই নয়; বরং রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে মিয়ানমারের বর্তমান অচলাবস্থা থেকে উত্তরণের একটি দরজাও বন্ধ হয়ে গেছে।’
সু চির কারাবাসের সাজা মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকটকে গভীর এক খাদে ফেলেছে- মন্তব্য করে জাতিসংঘের হাই কমিশনার বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হলো, এই সংকট শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিকভাবে নিরসনের যে পথ, তা এখন আরও দুর্গম।’
এদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন, মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ‘গলা চেপে’ ধরতে চাইছে। সু চির রায় ঘোষণার মধ্যে দিয়ে তাদের মনোভাব আরও একবার স্পষ্ট হলো।
উল্লেখ্য, গতবছরে দেশটিতে যে সাধারণ নির্বাচন হয়েছিল সেখানে ভোট জালিয়াতি হয়েছে এমন অভিযোগ এনে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। সেই নির্বাচনে সু চির এনএলডি পার্টি বিপুল ভোটে জয় লাভ করে। তবে নিরপেক্ষ নির্বাজন পর্যবেক্ষকরা বলেছিলেন নির্বাচনের বৃহৎ অংশ স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ ছিল।
মিয়ানমারের এই অভ্যুত্থান সারাদেশে বিক্ষোভের জন্ম দেয়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গনতন্ত্রপন্থী, আন্দোলনকারী এবং সাংবাদিকদের উপর ধর-পাকড় চালায়। পর্যবেক্ষক সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার বলছে, জান্তা সরকার ক্ষমতা দখলের পর ফেব্রুয়ারি থেকে বিক্ষোভে ১৩শোর বেশি মানুষ মারা গেছেন। আর যে ১০ হাজার ছয়শ’র বেশি মানুষকে গ্রেফতার করেছে সু চি তাদের মধ্যে অন্যতম।
বিএসডি/ এলএল