নিজস্ব প্রতিবেদক
স্কুলে ভর্তির আবেদনে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ৩০ বার আবেদন করা সেই শিক্ষার্থীর ভর্তি না নেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে স্কুল ভর্তি কমিটি। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এরপর ওই ছাত্রীকে ভর্তি না করাতে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। একই সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ফাইল তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এস.এম জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, গত ২১ ডিসেম্বর স্কুল কর্তৃপক্ষকে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া ছাত্রীর ভর্তি না নিতে চিঠি দিয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়ার যায় তার জন্য ফাইল উঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান শেখ বলেন, ওই ছাত্রীকে ভর্তি না করানোর জন্য মাউশি অধিদপ্তরের নির্দেশনার চিঠি পেয়েছি। সেই চিঠি সব শাখায় পাঠিয়ে তাকে ভর্তি না করাতে বলা হয়েছে।
মাউশির মাধ্যমিক শাখার একটি সূত্র জানিয়েছে, জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার ওই ছাত্রীকে এক বছরের জন্য ভর্তির অযোগ্য করা হতে পারে। অর্থাৎ ওই ছাত্রী তার জন্ম সনদ দিয়ে আগামী বছর যেন সে কোনো ভর্তির আবেদন করতে পারে সেভাবে মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করা হবে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় এক ছাত্রী তিনবার মেধাতালিকা সুযোগ পায়। ওই ছাত্রীর একই জন্মসনদ দিয়ে বিভিন্ন তথ্য পরিবর্তন করে মোট ৩০ বার আবেদন করেন। একেক আবেদনে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেওয়া দেয়। এতে আবেদন প্রক্রিয়ায় দুর্বলতায় ওই ছাত্রী ৩ বার ভর্তির সুযোগ পায়।
বিষয়টি জানাজানির পর প্রক্রিয়াটি টেলিটক ও আইডিয়াল স্কুলের ঘটনাটি তাদের তদন্ত করতে বলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
তদন্তে দেখা গেছে, ওই ছাত্রীর একই জন্মসনদ দিয়ে বিভিন্ন তথ্য পরিবর্তন করে মোট ৩০ বার আবেদন করা হয়েছে। একেক আবেদনে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেওয়া হয়। এতে আবেদন প্রক্রিয়ায় দুর্বলতায় ওই ছাত্রী ৩ বার ভর্তির সুযোগ পায়।
স্কুলে ভর্তির ডিজিটাল লটারির ফলাফলে দেখা গেছে, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখার দ্বিতীয় শ্রেণিতে মর্নিং শিফটে ইংলিশ ভার্সনের এক শিক্ষার্থীকে মেধাতালিকায় দুবার রাখা হয়েছে। এছাড়া একই শ্রেণির বাংলা ভার্সনের মর্নিং শিফটেও ওই শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় রয়েছে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলা ভার্সনে মর্নিং শিফটে সাধারণ কোটায় ওই শিক্ষার্থী ৯৬তম হয়েছে। একই শ্রেণিতে ইংলিশ ভার্সনের মর্নিং শিফটে সে সাধারণ কোটায় ১৫ ও ১৯তম স্থানে রয়েছে। সব জায়গায় তার একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। বাবা-মায়ের নামও একই। তবে তিন জায়গায় তিনটি ভিন্ন মোবাইল নম্বর রয়েছে। জন্ম নিবন্ধন নম্বরও ভিন্ন।
এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক (মাধ্যমিক) ও ঢাকা মহানগর ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, ওই ছাত্রীর নামে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে মোট ৩০ বার আবেদন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল ফাঁকফোকর দিয়ে একাধিক স্কুলে ভর্তি হওয়া। সে জন্য তার নাম ৩ বার এসেছে।