নিজস্ব প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে মুমূর্ষু স্বামীকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রুমা বেগম (৩০)। স্বামীর প্রতি এমন বিরল ভালোবাসায় ওই নারীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ এলাকাবাসী। বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী দুজনই ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রুমা বেগম লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের মুগলিবাড়ী এলাকার নুর হোসেনের (৩৫) স্ত্রী।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৪ বছর আগে উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের মুগলিবাড়ী গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে নুর হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উফারমারা মাছির বাজার এলাকার সহিদার রহমানের মেয়ে রুমা বেগমের। বিয়ের ১০ বছর পর নুর হোসেনের কিডনিতে সমস্যা ধরা পড়ে। পরে রংপুর সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয় মাস ডায়ালাইসিস করান। ভারতে গিয়েও চিকিৎসা নেন। পাঁচ মাস আগে নুর হোসেন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান নুর হোসেন।
সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক জানান, তার দুটি কিডনিই অচল হয়ে গেছে। রোগীকে বাঁচাতে হলে কমপক্ষে একটি কিডনির ব্যবস্থা করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে তারা বিভিন্ন কিডনি ব্যাংকে যোগাযোগ করেন। তবে কিডনি সংগ্রহ করতে পারেননি। এতে পরিবারটি হতাশ হয়ে পড়ে। তবে নুর হোসেনের সঙ্গে নিজের কিডনি মিলে যাওয়ায় স্বামীকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিতে রাজি হন রুমা বেগম।
গৃহবধূ রুমা বেগম মোবাইল ফোনে বলেন, আমি নিজ ইচ্ছায় স্বামীকে কিডনি দিয়েছি। আমি মনে করতাম বাঁচলে দুজনে বাঁচবো আর মরলে দুজনে মরবো। স্বামীকে নিজের কিডনি দিতে পেরে আমি খুবই খুশি। আল্লাহ যেন আমাদের সুস্থ রাখেন।
রুমা বেগমের মা আমিনা বেগম বলেন, জামাইকে বাঁচাতে মেয়ে রুমা বেগমকে কিডনি দিতে উৎসাহ দিই। স্বামীর বিপদে রুমার মতো প্রত্যেক স্ত্রীর তার স্বামীর পাশে থাকা উচিত।
বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুর ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনে অবাক হয়েছি। এটি একটি বিরল ঘটনা। স্ত্রীর কিডনি দিয়ে স্বামীর প্রাণ বাঁচানোয় এলাকাবাসী ওই গৃহবধূর প্রশংসা করছেন।
বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নেয়াজ নিশাত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, ঢাকার একটি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর স্বামী ও স্ত্রী চিকিৎসাধীন।
বিএসডি / আইকে