নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি নথি গায়েবের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ জনকে আটক করেছে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। রবিবার সচিবালয় থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকার হলেন জোসেফ, আয়শা, বাদল, বারী, মিন্টু, ফয়সাল। এর আগে, তদন্তের সময় সবার আঙ্গুলের ছাপ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করেন সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা। অন্তত ১৩ জনের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়।
দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের নিচতলায় (২৯ নম্বর কক্ষ) অতিরিক্ত সচিব মো. শাহাদাৎ হোসাইন ও যুগ্মসচিব কাজী আনোয়ার হোসেনের কক্ষে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন তারা।
এর আগে ঘটনার তদন্ত করতে সকালে সচিবালয়ে যায় সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গতকাল শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার জানান, ‘গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েব হওয়ার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাদিরা হায়দার জিডি করেন। গতকাল সচিবালয় বন্ধ থাকায় আজ থেকে তদন্ত শুরু হবে। কে বা কারা নথি গায়েব করেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, জিডিতে ১৭টি নথির নম্বর ও বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। নথিগুলোর মধ্যে- শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য মেডিকেল কলেজের কেনাকাটা সংক্রান্ত একাধিক নথি, ইলেকট্রনিক ডেটা ট্র্যাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ু মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং কর্মসূচি, নিপোর্ট অধিদফতরের কেনাকাটা, ট্রেনিং স্কুলের যানবাহন বরাদ্দ ও ক্রয় সংক্রান্ত নথি রয়েছে।
এদিকে সিআইডি সূত্র জানিয়েছে, ফাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবারই ছায়া তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ফাইল চুরির ঘটনায় অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. শাহ্ আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন যুগ্মসচিব (চিকিৎসা শিক্ষা) মো. আহসান কবীর এবং উপসচিব (চিকিৎসা শিক্ষা-১) মোহাম্মদ আবদুল কাদের। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. শাহাদাৎ হোসাইন বলেন, ফাইল গায়েব হওয়ার ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়ায় শাহবাগ থানায় জিডি করা হয়েছে। রবিবার থেকে এর হদিস বের করার চেষ্টা করা হবে। সব স্টাফ অফিসে আসার পর পুলিশসহ সবাই তদন্ত করবে। এটা অনেক ভয়াবহ একটা ব্যাপার, কারণ এটি সরকারি ডকুমেন্ট। এ জন্য এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় এবং তার একটা সমাধান বের করার চেষ্টা করছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, ফাইলগুলো ছিল প্রশাসনিক আদেশের, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ক্রয় সংক্রান্ত। আমরা কোনো অর্থ ছাড় করি না। আগে থেকেই এগুলোর বরাদ্দ থাকে, আমরা সেগুলোর অর্ডার করি। নথিগুলো প্রশাসনিক আদেশের। এই প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে তাদের কী হবে? সেখানে ১৭টি ফাইল ছিল। সব ফাইল সম্পর্কে আমারও ধারণা নেই। কী কারণে, কাকে কে সাবোটাজ করছে, এটা বুঝতে পারছি না।
কক্ষের দরজা খোলা ছিল কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা বোঝা যাচ্ছে যে, তাদের কাছে চাবি ছিল। কারণ কোনো ঘষামাজা নেই, ধাক্কাধাক্কি নেই, যে পয়েন্টে চাবি ঢোকে সেটা একেবারেই নরমাল। বোঝা যাচ্ছে, হয় ডুপ্লিকেট চাবি আছে অথবা আসল চাবি রয়েছে।
বিএসডি /আইপি