নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলার সমৃদ্ধিতে রাশিয়ার রকেট হামলায় থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ এখনও ইউক্রেনে রয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ডিজি- ইস্ট ইউরোপ) সিকদার বদিউজ্জামান বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা ইউক্রেন থেকে তার মরদহ উদ্ধার করতে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ নেব। আমরা এ বিষয়ে আন্তরিক।
ইউক্রেনে হামলার শিকার জাহাজের বাংলার সমৃদ্ধি ২৮ নাবিক রোমানিয়া থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসার পর বুধবার (০৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, হাদিসুরের মরদেহ কত দিনের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হবে তা টাইমফ্রামে বলা মুশকিল। কারণ আপনারা বুঝতে পারছেন ইউক্রেনে এখন একটি যুদ্ধ চলছে। সেখানে কেউ প্রবেশ করতে পারছে না। তবে আমাদের আন্তরিকতা শতভাগ রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের ডিজি সিকদার বদিউজ্জামান বলেন, অত্যন্ত আনন্দিত। ইউক্রেনে যে যুদ্ধাবস্থা, সেই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের একটি সম্পদ বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকরা আটকে গিয়েছিল তাদের পোল্যান্ড, সোমালিয়া ও অস্ট্রিয়া বাংলাদেশের দূতাবাসসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ২৮ জন (ক্রু মেম্বার) নাবিককে উদ্ধার করে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছি। শারীরিক পরীক্ষা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৮ জনকে তাদের পরিবারের কাছে যেতে দেওয়া হবে।
নিহত হাদিসুর রহমানের পরিবার ক্ষতিপূরণে দাবি জানিয়েছে, সে বিষয়ে আপনারা কি পদক্ষেপ নেবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমে সেখান থেকে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তারপর ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের জন্য যা করণীয় তা করবো।
তিনি বলেন, নিহত হাদিসুরের মরদেহ যত দ্রুত সম্ভব আমরা ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করতে পদক্ষেপ নেবো। আমরা এ বিষয়ে খুব আন্তরিক। এ বিষয়ে আমাদের তিনটি মিশন এক সঙ্গে কাজ করছে।
আজ যে নাবিকরা দেশে ফিরেছেন তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, উদ্ধার ২৮ জন শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তবে তারা ট্রমাটাউজড। তাদের মেডিক্যাল টেস্টসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
এর আগে, ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ২৯ জন নাবিক নিয়ে আটকা পড়েছিল জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এ জাহাজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। জাহাজটি ইউক্রেন থেকে সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল।
তবে, যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর আর ফিরতে পারেনি। গত ২ মার্চ ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। পরদিন ৩ মার্চ অক্ষত অবস্থায় জাহাজটি থেকে ২৮ নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাদের নিরাপদ বাঙ্কারে রাখা হয়। সেখান থেকে তাদের প্রথমে মলদোভা, পরে রোমানিয়া নিয়ে আসা হয়।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রাত পৌনে দুইটায় রোমানিয়া থেকে ২৮ নাবিক টার্কিস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে রওয়ানা দেন। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
বিএসডি/ এফএস