ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ ১৭তম দিনে গড়িয়েছে। এর আগের ১৩ দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২১ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। বিপরীতে হামাসের হামলায় তিন ইসরায়েলি সাংবাদিকও নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত আটজন। এই অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে গাজা যেন সেখানে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠেছে।
গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ৫ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। একই সঙ্গে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েলও এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে। এর পর থেকেই দফায় দফায় গাজায় বিমান, স্থল এমনকি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট বা সিপিজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর হামলায় অন্তত ১৭ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় লেবাননের এক সাংবাদিকও নিহত হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রাণহানি যে কেবল গাজাতেই হয়েছে তা নয়। হামাসের ইসরায়েল হামলার সময় তিন ইসরায়েলি সাংবাদিকও নিহত হয়েছেন।
সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশেষ করে গাজার সাংবাদিকেরা এই সংঘাতের সংবাদ কভার করার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান, বিধ্বংসী বিমান হামলা, অস্থিতিশীল ও বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগহীন অবস্থায় ব্যাপক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছেন।’ সংগঠনটি জানিয়েছে, ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২১ সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আটজন এবং তিনজন সাংবাদিক হয় নিখোঁজ, নয়তো কেউ তাঁদের ধরে নিয়ে গেছে।
সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সিপিজের কাছে এখনো অনেক অপ্রমাণিত খবর রয়েছে যে অনেক সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। নিখোঁজ বা অপহৃত এবং আহত হয়েছেন অনেকে। পাশাপাশি অনেক গণমাধ্যম ও সাংবাদিকের কার্যালয় ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সিপিজে এ বিষয়গুলোর তদন্ত করছে।
সিপিজের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী শেরিফ মনসুর বলেন, সাংবাদিকেরা অবশ্যই বেসামরিক ব্যক্তি এবং তাঁরা এই সংকটপূর্ণ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন। তাই যুদ্ধরত পক্ষগুলোর উচিত নয় সাংবাদিকদের তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা। এই হৃদয়বিদারক সংঘাত কভার করার জন্য এই অঞ্চলের সাংবাদিকেরা মহান ত্যাগ স্বীকার করছেন। সব পক্ষকেই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। সূত্র: গার্ডিয়ান
বিএসডি/ এফ এ