ব্যাটিংয়ে তারুণ্যই শক্তি
বাংলাদেশ সফরে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংটা পুরোপুরিই নির্ভর করবে অধিনায়ক টম ল্যাথামের ওপর। অথচ গত চার বছর নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টির ভাবনাতেই ছিলেন না তিনি! ২০১৭ সালে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলা ল্যাথাম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১৩টি, ব্যাটিং করেছেন ১০ ইনিংসে। ১৬ গড় ও ১০৩ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন মাত্র ১৬৩। ল্যাথামের মতোই অবস্থা হেনরি নিকলস (৫ ম্যাচ) ও টম ব্লান্ডেলের (৩ ম্যাচ)। তিনজনই টেস্ট ও ওয়ানডে খেললেও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অনিয়মিত। বাংলাদেশ সফরে নিউজিল্যান্ড দলের ‘অভিজ্ঞ’ ব্যাটসম্যান বলতে তাঁরাই, তবে সেটি টি–টোয়েন্টিতে নয়।
তাঁদের বাদ দিলে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংটা মূলত তারুণ্যনির্ভর। তিন তরুণ ব্যাটসম্যানের দিকেই তাকিয়ে থাকবে দলটা। আশাটা বেশি ২১ বছর বয়সী ফিন অ্যালেনের কাছেই। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি কাঁপানোর পর ২১ বছর বয়সী এই তরুণের আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছে গত মার্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে। উইল ইয়াং ও প্রথমবারের মতো দলে ডাক পাওয়া রচিন রবীন্দ্রের কাছেও প্রত্যাশা আছে কিউইদের। বাংলাদেশের উদ্দেশে কাল দেশ ছাড়ার আগে দলের তরুণদের নিয়ে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ল্যাথাম বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের গভীরতা দেখে ভালো লাগছে। আশা করি, ওরা ভালো করবে। দেখতে হবে কন্ডিশন কেমন থাকে। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাই হবে গুরুত্বপূর্ণ।’
গ্র্যান্ডহোমই সবচেয়ে অভিজ্ঞ
৩৬টি টি-টোয়েন্টি খেলা অলরাউন্ডার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমই বাংলাদেশ সফরে এই সংস্করণে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ। গ্র্যান্ডহোমের দুর্ভাগ্য, ভালো ছন্দে থাকার পরও নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি। তাঁর মিডিয়াম পেস খেলাটা মিরপুরের উইকেটে সহজ হবে না। লোয়ার অর্ডারে গ্র্যান্ডহোমের মারকাটারি ব্যাটিংও পাল্টে দিতে পারে ম্যাচের চেহারা।
দলে আছেন ২৯ বছর বয়সী স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার কোল ম্যাককনকি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স, স্পিন দক্ষতা ও মিরপুরের কন্ডিশনের কথা ভেবেই প্রথমবারের মতো দলে ডাকা হয়েছে তাঁকে। ঢাকার বিমান ধরার আগে ম্যাককনকি বলছিলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বেশ কিছু ভিডিও দেখেছি। কন্ডিশন কেমন হতে পারে, সে ব্যাপারে একটা ধারণা হয়েছে। লিংকনে আমরা যে কন্ডিশন তৈরি করে অনুশীলন করেছি, সেটা আশা করি সাহায্য করবে।’
বোলিংয়ে অস্ত্র এজাজ প্যাটেল
বাংলাদেশ সিরিজ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন হবে অভিজ্ঞ পেসার ডগ ব্রেসওয়েলের। নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে তাঁকে সর্বশেষ দেখা গেছে ২০১৯ সালে। টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফারগুসন, অ্যাডাম মিলনের মতো প্রথম সারির পেসারদের অনুপস্থিতিতে এবার ডাক পড়েছে ব্রেসওয়েলের। দলে থাকা জ্যাকব ডাফি, স্কট কুগালাইন, ব্লেয়ার টিকনারদের এর আগে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টি খেলিয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে বাংলাদেশ সফরের আগে বেশি হইচই হচ্ছে তরুণ ফাস্ট বোলার বেন সিয়ার্সকে নিয়ে। ২৩ বছর বয়সী সিয়ার্সকে বলা হচ্ছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের নতুন গতি তারকা। ল্যাথামের যত রোমাঞ্চ তাঁকে ঘিরেই, ‘বেনের গতি চোখে পড়ার মতো। সে একদমই নতুন। এটাও আমাদের ক্রিকেটের জন্য রোমাঞ্চকর।’
পাঁচ পেসার নিয়ে বাংলাদেশে এলেও বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেলই হবেন সফরে নিউজিল্যান্ডের বোলিংয়ের মূল হাতিয়ার। প্যাটেল মূলত টেস্ট বোলার হলেও তিনি এখন সাদা বলের ক্রিকেটেও নিয়মিত হতে চান। বাংলাদেশ সিরিজকে প্যাটেল দেখছেন সে সুযোগ হিসেবেই, ‘বাংলাদেশে এমন কন্ডিশনে খেলব, যেখানে স্পিনাররা যথেষ্ট সাহায্য পাবে। স্পিনার হিসেবে আমাকে হয়তো বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। এটা আমার জন্য বিশেষ কিছুই। স্পিনার হিসেবে এমন কন্ডিশনে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।’
মাঠ, উইকেট সবই নিজেদের হলেও এই নিউজিল্যান্ড অনেকটাই ‘অচেনা’ বাংলাদেশ দলের জন্য। দ্বিতীয় সারির কিউই দলের বিপক্ষে সেটাই হয়তো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে মাহমুদউল্লাহদের জন্য।