পর্যটন ডেস্ক,
দীর্ঘ চার মাস ১৯ দিন বন্ধের পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে উন্মুক্ত করা হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অপরূপ লীলাভূমি কুয়াকাটা সৈকতের দ্বার।
আগামীকাল থেকে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগত পর্যটকদের সেবা প্রদান করবে পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে ভ্রমণ পিপাসুদের বরণ করতে এরই মধ্যেই ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এদিকে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ছোট বড় সব ধরনের ব্যবসায়ীদের মাঝে।
করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে গত ১ এপ্রিল থেকে সৈকতে পর্যটকদের অবস্থান ও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এতে পর্যটন নগরী কুয়াকাটার সবগুলো দর্শনীয় স্থান সমূহ বন্ধ থাকায় লোকশানের মুখে পড়েন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে সম্প্রতি দেশের সব পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণায় এখন স্বস্তি ফিরেছে সাগর পারের ব্যবসায়ীদের মাঝে।
মুখিয়ে থাকা এসব ব্যবসায়ীরা এখন নতুন করে সাজ ও সাজের মিলবন্ধনে কুয়াকাটাকে স্ব-রুপে ফেরাতে কাজ করছেন আপন মনে। ধুলোর আবরণ ঝেড়ে মুছে পর্যটকদের আপ্যায়নে প্রস্তুত করা হয়েছে শতাধিক হোটেল-মোটেল ও খাবার দোকানগুলো। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ভাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে শুটকি পল্লীসহ ঝিনুক শামুকের দোকান। পিছিয়ে নেই সৈকতের ছাতা ও বেঞ্চ ব্যবসায়ীরাও। চা-পান ও চটপটি বিক্রেতারাও রয়েছেন আগত পর্যটকের অপেক্ষায়।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রায় ৫ মাস পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা বন্ধ থাকায় কয়েক’শ কোটি টাকা লোকশান হয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।
ওয়াটার বাইক ও স্টুডিও ব্যবসায়ী বশার মুসুল্লি জানান, দীর্ঘদিন পরে আমরা আবারো ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছি। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। লকডাউনে অনেক লোকশানে পরেছেন বলে জানান তিনি।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ভাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে শুটকি পল্লীসহ ঝিনুক শামুকের দোকান।
শুটকি ব্যবসায়ী সোহেল মাহামুদ জানান, দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ থাকায় মাছ বিক্রি করতে পারিনি। ফলে বদলা দিয়ে মাছ শুকাতে লোকশান গুনতে হয়েছে। তবে এখন দোকান খুলতে পারবেন বলে অনেক খুশি।
কুয়াকাটা ইলিশ পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, টানা প্রায় ৫ মাস পরে কাল থেকে পর্যটক আগমনে সৈকত উন্মুক্ত করা হয়েছে। এতে আমরা অনেক খুশি, সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি আমরা সরকারী বিধিনিষেধ শতভাগ মেনে চলার চেষ্টা করবো।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যনেজমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন কুটুম‘র সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, বিবেচনা করে সরকার ১৯ শে আগস্ট দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ পরিদর্শক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো. বদরুল কবির বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সচেষ্ট থাকবে।
কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মো. শহীদুল হক জানান, পর্যটকসহ ব্যবসায়ীদের মাস্ক পরিধানে বাধ্যতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া রাত আটটার পরে বাইরে ঘোরাফেরা করতে পারবে না। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে বলেও জানান তিনি।
বিএসডি/আইপি