লাইফস্টাইল ডেস্ক,
চা ও কফি পান অবশ্যই আসক্তির পর্যায়ে ফেলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সেইসঙ্গে অতিরিক্ত এই আসক্তির ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে বল মত প্রকাশ করেছেন তারা। তবে চা-কফির আসক্তির ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট হাসপাতাল এর সাবেক পরিচালক, অধ্যাপক ডা. মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী।
সকাল-বিকেল দুই কাপ কফি পান করলে সেটিতে নেশা হওয়ার কিছু নেই। চায়ের ক্ষেত্রেও একই কথা। যদিও চায়ের ক্ষেত্রে আসক্তি কম থাকে। চায়ের ক্ষেত্রে আসক্তিটা মানসিক হয়, শারীরিক আসক্তি খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু কফির ক্ষেত্রে শারীরিক আসক্তিও হতে পারে। এমনকি কফির কারণে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।কফি পান করলে আমরা মনে করি, শরীরটা একটু চাঙ্গা হয়। তবে সেক্ষেত্রে মাত্রাটা আমাদের বুঝতে হবে। সকাল-বিকেল দুই কাপ কফি পান ঠিক আছে। কিন্তু সেটি মাত্রাতিরিক্ত হলে সমস্যা আছে এবং অবশ্যই তা আসক্তির পর্যায়ে পড়েছে। এ ছাড়া কফির মধ্যে যে কেমিক্যাল রয়েছে, তা অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীরের জন্যে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মাদকাসক্তির যে শর্তগুলো আছে, তার মধ্যে একটা হলো দ্রব্যটি বারবার গ্রহণ করতে চাওয়া। তার মানে কফি যদি আপনার দিনে দুই ঘণ্টা পরপর প্রয়োজন হয়, এটি ছাড়া আপনি কাজ করতে পারছেন না, তাহলে সেটা অবশ্যই নেশার পর্যায়ে চলে গেছে।নেশা বা আসক্তি যেকোনো বিষয়ে হতে পারে। সবকিছুই যে মাদক হবে তা কিন্তু নয়। ইন্টারনেট, সিনেমা দেখা, জুয়া খেলার মতো নন-সাবস্ট্যান্স এডিকশন হয়। এখানে তো কোনো মাদকদ্রব্য কাজ করছে না।
মূল কথা হলো, যেসব জিনিস বা কাজ আপনার দৈনন্দিন জীবনকে বাধাগ্রস্ত করে, একটি নির্দিষ্ট জিনিস বা কাজের প্রতি আপনার নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে দেয়, সেটিকেই আমরা আসক্তি হিসেবে ধরে নেই।
চা কিংবা কফি পানেও আসক্তি হয়ে যায় যখন আপনি নিয়মিত বেশি মাত্রায় সেটি গ্রহণ করতে থাকেন। যদিও এ ধরনের আসক্তি নেশাদ্রব্যের চেয়ে কম হয়। একেকটি নেশাদ্রব্যের একেক রকম আসক্তি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, হিরোইন এমন একটি নেশাদ্রব্য যেটি একবার গ্রহণ করলেও সারা জীবন সেটির প্রতি আসক্তি থেকে যায়।
তবে সব বস্তু একই রকম আসক্তি তৈরি করে না। তবুও আমরা পরামর্শ দেই, যারা চা-কফি পান করেন, পরিমাণমতো করবেন। কারণ যেকোনো কিছু মাত্রাতিরিক্ত হারে গ্রহণ করলে সেটি শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
বিএসডি/আইপি