জীবন কৃষ্ণ দেবনাথ:
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সিইপিজেড এলাকায় বসবাসরত এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় জোর পূর্বক অপহরণ করা হয়েছে মর্মে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, গত ৬ আগস্ট বাদী স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৮, (৬ আগস্ট২০২১) ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৭ রুজু করা হয়। উল্লেখ্য যে, মামলার বাদীনি গার্মেন্টস্ কর্মী মর্জিনা বেগম বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রামের কাজির গলি সিটিং মার্কেট ইপিজেড থানায় বসবাস করে স্বামী সন্তান নিয়ে সুখেই দিনযাপন করছিলাম। এক সময় মামলার এজাহারে উল্লেখিত এক সময় আমি আমার গর্ভজাত কন্যা পপি আক্তারকে (১৭) কে নিয়ে বর্তমান ঠিকানা ভাড়াবাসায় ১ বছর যাবৎ স্বপরিবারে বসবাস করিয়া আমার দুই সন্তানের মধ্যে ছোট মেয়ে পপি আক্তার পতেঙ্গা মহিলা কলেজের এইচএসসি ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং পুত্র মনির বর্তমানে বেকার । গত (২৫ জুলাই ২০২১) রবিবার আনুমানিক রাত ৮ ঘটিকার সময় আমরা নিটবর্তী ভাড়াটিয়া প্রতিবেশীর বাসায় নিমন্ত্রণে যাওয়ার সময় আমার ছোট মেয়ে পপি আক্তার (১৭) কে ঘরে রেখে যায়।
এর পরবর্তীতে বাসায় অর্থাৎ ২৫ জুলাই রাত ১০ ঘটিকার সময় আসায় এসে ছোট মেয়ে পপি আক্তার কে বাসায় না পেয়ে আশেপাশে খোঁজা-খুজি করেও মেয়েকে না পেয়ে পরবর্তীতে জানতে পারি যে, আমার মেয়ের বান্ধবী প্রকাশ কর্ণফুলী প্রকাশ মরিয়মের মাধ্যমে বিবাদী অপরহরণকারী মো. মিজান (২২) এর সাথে পূর্ব পরিচিতির সূত্র ধরে ঘটনার দিন উল্লেখিত তারিখ অনুযায়ী আমাদের বাসায় সবার অনুপস্থিতি টের পেয়ে ফুসলিয়ে জোর পূর্বক আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে পপিকে অপহরণকারী মো. মিজানুর রহমান (২২), ইপিজেড, চট্টগ্রাম এ বসবাসরত অপহরকারী মিজান আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৩ মাস সময় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত অপহৃতা পপি ও অপহরণকারী ঘাতক মিজানকে আটক অথবা উদ্ধার করতে না পারায় জনমনে ব্যাপক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, মামলাটি গ্রহণকালীন সময়ে তৎকালীন ইপিজেড থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরীর স্বাক্ষরিত তথ্য বিবরণীতে মামলার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহলের ধারণা একজন কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করার পরও দীর্ঘ ৩ মাস অতিবাহিত হতে চলেছে। অথচ প্রশাসন এখনো পর্যন্ত অপহৃতা ও অপহরণকারী দলের সদস্য মিজানকে আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে না আসায় ইতিমধ্যে পপি কলেজপাড়ায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
উক্ত পতেঙ্গা মহিলা কলেজের অধ্যাপিকা বলেন, একটি শিক্ষিত সমাজে একজন সুশিক্ষিত নারীকে কলেজ পড়ুয়া অবস্থায় বখাটে কর্তৃক অপহরণের দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও প্রশাসন কেন আসামীকে আটক ও ভিকটিমকে উদ্ধার করতে নানা প্রশ্নের সম্মূখীন তা তাদের বোধগম্য নয়। তবে এ বিষয়ে ভিকটিমের মা মর্জিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার অর্থ বিত্ত না থাকার কারণে আমি আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে অক্ষম হয়ে পড়েছি। তিনি এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, চট্টগ্রাম সিএমপি পুলিশ কমিশনার, মাননীয় ডিআইজি , স্থানীয় প্রশাসনসহ , র্যাব ও গোয়েন্দার একান্ত সহযোগিতা কামনা করেছেন।
তবে এ বিষয়ে ¯স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব জিয়াউল হক সুমন বলেন, একটি সুশিক্ষিত নারীর প্রতি মায়ের শ্রদ্ধাবোধ থাকার কথা সে সমাজে যখন একজন শিক্ষিত নারী অপহরণের কবলে পড়ে সেখানে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঐ অপহৃত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্যবোধ মনে করি।
তিনি এ ইপিজেড থানায় বর্তমানে নবনিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ মো. কবির ইসলাম এর একান্ত সহযোগিতা কামনা করেন। তবে এ বিষয়ে ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কবির বলেন, আমি আমার সাধ্যমতো আমার প্রশাসনিক তৎপরতার মাধ্যমে ঘটনাটিকে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সহ ভিকটিমকে উদ্ধারের যথাযথ ব্যবস্থা চালিয়ে যাচ্ছি।
বিএসডি /চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান /আইপি