বিনোদন ডেস্ক:
গত সোমবার রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ। এ খবর শুনেই আঁতকে ওঠেন বরেণ্য পরিচালক কাজী হায়াৎ।
কেননা, বিগত ২৪ বছর আগে ১৯৯৮ সালে এই কাজী হায়াতের হাত ধরেই চলচ্চিত্রে নাম লেখান শিমু।
শিমু হত্যাকাণ্ডের খবরে কাজী হায়াৎ গণমাধ্যমকে বলেন, “শান্ত মেয়েটাকে কারা এভাবে মারল! আহ্হা…। মেয়েটার তো একটা মেয়ে আর একটা ছেলেও ছিল। কী হবে ওদের! এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তথ্য বের হয়ে আসা উচিত। যে বা যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। এমন শাস্তি, যাতে আর কোনও দিন কেউ যেন এমন অপরাধের চিন্তাই করতে না পারে।”
তিনি আরও বলেন, “শিমু আমার ছবিতে কাজ করেছিল। মেয়েটা আমার চোখে ভীষণ ভালো ছিল। মান্না ওকে আদর করত, আমিও ওকে ভালো জানতাম। কিন্তু আজ বস্তাবন্দি লাশের কথা শুনে তো বিস্মিত হলাম, খুবই দুঃখজনক। ভীষণ দুঃখজনক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কি একটু অবনতি ঘটল? নাকি এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।”
প্রয়াত শিমুকে নিয়ে এই গুণী নির্মাতার ভাষ্য, “শিমু একজন শিল্পী। আফটার অল দারুণভাবেই শিল্পীমনা ছিল। তীব্র ইচ্ছা ছিল চলচ্চিত্র এবং শিল্প অঙ্গনে কিছু করার। এভাবে বস্তাবন্দি লাশ হওয়া খুব দুঃখজনক। ও (শিমু) যে এভাবে চলে গেল, এটা খুবই দুঃখজনক।”
২৪ বছর আগে শিমুর খোঁজ কীভাবে পেলেন তা জানিয়ে কাজী হায়াৎ বলেন, “ওর ভাই খোকন এফডিসিতে ঘোরাঘুরি করত। তার সঙ্গে মান্নার ভাইয়ের যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্রে মান্নার সঙ্গেও পরিচয়। একদিন শিমুকে এনে মান্না বলল- হায়াৎ ভাই, দেখেন তো এই মেয়েটা চলে কি না? চলচ্চিত্রে অভিনয় করার তার খুব আগ্রহ। আমিও বললাম, ওকে। আমার প্রথম সিনেমা ‘বর্তমান’-এ প্রথম কাজ করল। এরপর ‘মিনিস্টার’–এ অভিনয় করে। দুইটা সিনেমায় মান্নার অনুরোধে শিমুকে নেওয়া।”
শিমুকে ‘বিষ্ণুপদ’ নামে ডাকতেন কাজী হায়াৎ। কারণ এই পরিচালকের গ্রামে বিষ্ণুপদ নামে একজন হিন্দু ভদ্রলোক ছিলেন। তার চেহারার সঙ্গে শিমুর চেহারায় মিল ছিল। শিমু ছিল ওই ভদ্রলোকের মতো নম্র আর ভদ্র। খুব একটা কথা বলত না। চুপচাপ শুনত; শান্ত মেজাজের।
প্রসঙ্গত, অভিনেত্রী শিমু প্রায় ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি অর্ধশতাধিক নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়া তিনি একটি টিভি চ্যানেলের মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন। শিমু চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী সমিতির সদস্য পদ হারানো ১৮৪ জনের মধ্যে একজন। তিনি ভোটাধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করছিলেন।
বিএসডি/ এলএল