আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অর্থনীতিতে অব্যবস্থাপনা এবং জাতীয় মুদ্রা ইরানি রিয়ালকে প্রায় ডুবিয়ে দেওয়ার দায়ে অর্থমন্ত্রী আবদোলনাসের হিম্মাতিকে অব্যাহতি দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। দেশটির রাষ্ট্রয়ত্ত বার্তাসংস্থার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
হেমাতি দেশের অর্থনীতির পদে থাকবেন কি না— এ প্রশ্নে রোববার ভোট হয় ইরানের পার্লামেন্টে। তাতে হিম্মাতির বিপক্ষে ভোট দেন ১৮২ জন এবং পক্ষে ভোট দেন ৮৯ এমপি। ফলে ভোটের পরেই কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় হিম্মাতির বিদায়, যিনি ৭ মাস আগে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের গঠিত মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর পদে ছিলেন।
বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা ও কালো তালিকায় থাকার জেরে ইরানি রিয়াল বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রাগুলোর মধ্যে একটি। আবদোলনাসের হিম্মাতি অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর রিয়ালের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছায়। গত বছর যখন তিনি মন্ত্রী হন, সে সময় এক ডলারের বিপরীতে পাওয়া যেতো ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০, বর্তমানে ডলারের বিপরীতে রিয়ালের মান নেমে পৌঁছেছে ৯ লাখ ২৭ হাজারে। অর্থাৎ হিম্মাতি মন্ত্রী হওয়ার পর ইরানি রিয়েলের মান কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
মুদ্রার মান ব্যাপকভাবে নেমে যাওয়ায় গত এক বছরে মূল্যস্ফীতিও তীব্র আকার নিয়েছে ইরানে। রোববার পার্লামেন্টে ভোটের সময়ে একাধিক এমপি বলেন, খাবার, ওষুধ এবং আবাসনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য-পরিষেবার মূল্য নিয়ন্ত্রণেও ব্যর্থ হয়েছেন হিম্মাতি।
হিম্মাতি অবশ্য বরাবরই বলে আসছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং ফ্রান্সভিত্তিক সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের কালো তালিকা থেকে মুক্তি না মিললে ইরানের অর্থনীতির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। নিজ মেয়াদে গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনায় এ বিষয়টিকে অগ্রাধিকারও দিচ্ছিলেন তিনি।
তবে বিরোধী এমপিরা মনে করতেন, হিম্মাতির উচিত ছিল নিষেধাজ্ঞা-কালো তালিকা থেকে মুক্তি নয়, বরং এগুলোকে অকার্যকর করে দিতে পারে— এমন পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হওয়া।
অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে ২০১৭ সাল থেকেই ব্যাপক চাপে আছেন ইরানের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত লোকজন। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক চাপও বাড়ছে তাদের ওপর। এই মুহূর্তে ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থি শাসকের সমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেশটির ভঙ্গুর ও টালমাটাল অর্থনীতি।
সূত্র : রয়টার্স