নিজস্ব প্রতিবেদক:
দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতির আজ (২০ আগস্ট) অষ্টম দিন। ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চাবাগানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির মাধ্যমে ধর্মঘট করছেন শ্রমিকরা।
জানা গেছে, এর আগের চার দিন ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি করে মালিক পক্ষের সাড়া না পাওয়ায় পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু হয়। এই কয়দিন ধরে চা শ্রমিকরা বাগানে বাগানে মিছিল-মিটিং-সমাবেশ ছাড়াও সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
চা শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, জুনে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক পক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিক পক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হলেও মালিক পক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট টানা চার দিন প্রতি দিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করা হয়। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চাবাগানে শুরু হয় শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি।
চাবাগান অধ্যুষিত হবিগঞ্জ জেলার ২৪টি বাগানে শ্রমিকরা কর্মবিরতির পাশাপাশি বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করছেন। ১৩ আগস্ট (শনিবার) চুনারুঘাটে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সড়ক অবরোধ করেছিলেন চা শ্রমিকরা। ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে চুনারুঘাটে ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের চান্দপুর এলাকায় অবরোধে বসেন তারা। পরে হাজার হাজার নারী-পুরুষ চা শ্রমিক দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার হেঁটে চুনারুঘাট শহরে সড়ক অবরোধ করতে আসেন। আসার পর পুলিশ ব্যারিকেড দিলেও তা ভেঙে সড়ক অবরোধ করা হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন রাজপথে কর্মসূচি না দিলেও ১৮ আগস্ট মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। মাধবপুর উপজেলার সুরমা ও তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের হাজার হাজার শ্রমিক অবরোধ করেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। দুপুর ২টা থেকে পৌনে ১ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। পরে প্রশাসনের কথায় মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
তবে চা শ্রমিক ইউনিয়ন ১৬ আগস্ট শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছিল। কিন্তু মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকের জন্য তা স্থগিত করা হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘মালিক-শ্রমিকের মধ্যে চুক্তির ১৯ মাস পার হলেও তারা মজুরি বাড়ায়নি। দৈনিক মজুরি ১২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে সীমিত কর্মবিরতি পালনের পরও দাবি পূরণ না হওয়ায় দেশের সব চাবাগানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন।’
বিএসডি/ফয়সাল