কৃষি ডেস্কঃ
বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী নারায়ণপুর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার একটি গ্রাম। গ্রামের শিক্ষার্থী খায়রুল আলম। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করেছেন। অসময়ে টমেটো চাষ করে ভালো লাভ পেয়েছেন।
নারায়ণপুর গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ছোট টিলার এপাশে বাংলাদেশ ওপাশে ভারত। টিলার পাশে সমতল ভূমিতে সারি সারি পলিথিন সেড। তার নিচে টমেটো চাষ করা হয়েছে। জমিতে কাজ করছেন মালিক ও শ্রমিকরা। কেউ গাছ বেঁধে দিচ্ছেন।
কেউ টমেটো তুলে ঝুড়িতে ভরছেন। কেউ পাইকারি ক্রেতাকে টমেটো বুঝিয়ে দিচ্ছেন। সবুজ ও লাল টমেটোতে সূর্যের আলো পড়ে আরো রঙিন হয়ে উঠেছে। কাজ শেষে নগদ টাকা পেয়ে ঘর্মাক্ত মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়ে চাষির। চাষি খায়রুল আলম এদিন বিক্রি করেছেন কয়েক হাজার টাকার টমেটো।
খায়রুল আলম জানান, গ্রামের পাহাড়ের ঢালুতে ১০০ শতক জমিতে বারি-৪ টমেটো চাষ করেছেন। লকডাউনে অলস সময়টাকে কাজে লাগিয়ে তাদের পৈত্রিক কৃষির সাথে প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করবেন।
ভাই খোরশেদ আলমও তার থেকে বারি-৪ টমেটোর গ্রাফটিং কলমের চারা সংগ্রহ করেন। বাড়ির পাশে অনাবাদী ৫০ শতক জমি তৈরি করেন। প্রথম বছর তিনি দেড়লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেন। ১৭টি পলিথিন সেট নির্মাণ করেন।
এতে প্রায় ছয় হাজার বারি-৪ টমেটোর গ্রাফটিং কলমের চারা রোপণ করেন। স্থানীয়ভাবে তার জমির টমেটোর চাহিদা রয়েছে। পাকা টমেটো ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।
তিনি আরও বলেন, তিনি টমেটোর চারাও বিক্রি করেন। তার নিকট কোন তরুণ টমেটোর চাষ বিষয়ে পরামর্শ চাইলে তিনি সহযোগিতা করেন। তিনি কৃষি দিয়েই তার পেশা হিসেবে নিবেন বলে জানান।
কৃষি ও পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত বলেন, সীমান্ত এলাকার তরুণরা মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে যায়। সেখানে শিক্ষিত তরুণদের কৃষিতে যুক্ত হওয়া আনন্দের সংবাদ। তাদের হাত ধরে কৃষি আরো এগিয়ে যাবে।
জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা তারিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বারি-৪ টমেটো গ্রীষ্মকালে চাষ করা যায়। এর সাথে তিত বেগুনের গ্রাফটিং করায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলনও হয় বেশি। গ্রীষ্মকালীন টমেটো বিক্রি করে ভালো লাভ পায় চাষি। তাই অনেকে এই সময়ে টমেটো চাষে ঝুঁকছেন।
বিএসডি/এএ