নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের বিরোধিতা করা ছয়জন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ২২ প্রার্থী আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে আর কখনই নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে না ও আজীবন দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করা এসব প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন চাওয়ায় কর্মীদের মাঝে ক্ষাভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জহিরউদ্দীন সিদ্দিক টিটো জানান, গত উপজেলা নির্বাচনে নবীনগর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফিরোজ মিয়া, নবীনগর পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান মৌসুমী আক্তার, শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার হোসেন জামাল, ইব্রাহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা, রসুল্লাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর, সলিমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সরাসরি নৌকার বিরোধিতা করেছেন। নৌকার বিরোধিতা করেও তারা এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাচ্ছেন। এরা সুবিধাবাদী, মনেপ্রাণে আওয়ামী লীগের কেউ নন। তাদের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রে অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ বলছে, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া এবং দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করাদের মধ্যে যারা দলীয় মনোনয়ন কিনেছে তাদের আমলনামা লিখে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হবে।
জানা যায়, তৃতীয় ধাপে নবীনগর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৩টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে নবীনগর পূর্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মৌসুমী আক্তার, নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ফিরোজ মিয়া, শ্রীরামপুরের চেয়ারম্যান আজাহার হোসেন জামাল, ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা, রসুল্লাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আকবর ও সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। এছাড়াও দলের বিরোধিতা করা অনেকেই এবারের ইউপি নির্বাচনে লড়তে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।
পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মৌসুমি আক্তার বলেন, আমি নৌকার বিদ্রোহী হয়েও গত নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। নৌকার মনোনয়ন চেয়েছি, দিলে নির্বাচন করব। পূর্ব ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি শামছুল হক ও সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী ইউনিয়নসহ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরোধীতা করেন। তারাও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। এছাড়া এই ইউনিয়নে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক।
জানা যায়, ১৩টি ইউনিয়নে ১০৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছেন। ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানরা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন।
এদিকে, গত শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে তৃণমূল নেতাদের সাথে মতবিনিময় সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ফয়জুর রহমান বাদল বলেন, দলের বিপক্ষে যারা কাজ করেছে কিংবা প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাদের আমলনামা তৈরি করে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, বিদ্রোহীসহ অন্যান্য অভিযোগ থাকা প্রার্থীদের বিষয়ে স্ব স্ব উপজেলা আওয়ামী লীগকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
বিএসডি /আইপি