নিজস্ব প্রতিবেদক
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সর্বস্ব হারানো সনাতন ধর্মাবলম্বী এক পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে দলটির মানবিক উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির জন্য নির্মাণ করা হয়েছে একটি চারচালা টিনের ঘর, যা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নিহত দম্পতির সন্তান কেশব দাসের হাতে ঘরটির চাবি তুলে দেন জামায়াত নেতৃবৃন্দ। এই আয়োজনে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের জামায়াতের এমপি পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ মাহফুজুল হক, হাতিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাস্টার বোরহানুল ইসলাম, বুড়িরচর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আশরাফ, ইসলামী ছাত্রশিবির হাতিয়া উপজেলা দক্ষিণ শাখার সভাপতি আশিকুল ইসলাম, হাতিয়া আদর্শ থানা সেক্রেটারি আবদুল ওহাব বাবুলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গত ৩১ জানুয়ারি গভীর রাতে হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামের মুনদা বাড়িতে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিমাই চন্দ্র মজুমদার ও তার স্ত্রী মিলন বালা আগুনে পুড়ে মারা যান। তাদের পরিবার পরিচালনার অন্যতম উৎস সাতটি গরুও পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘটনার পরপরই জামায়াতে ইসলামী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করে। তারা প্রতিশ্রুতি দেয় একটি বসতঘর নির্মাণ করে দেওয়ার এবং সে অনুযায়ী নিজেদের তত্ত্বাবধানে ঘরটি নির্মাণ সম্পন্ন করে কেশব দাসের হাতে চাবি তুলে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জামায়াতের এমন মানবিক ভূমিকায় তারা অবাক এবং আনন্দিত। একজন হিন্দু পরিবারের জন্য একটি ইসলামী দল এভাবে এগিয়ে আসবে, তা অনেকেই কল্পনাও করেননি।
সাইফুল ইসলাম নামে গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, আমরা দেখেছি এই দুঃসময়ে অনেকেই সহানুভূতির কথা বলেছে, কিন্তু জামায়াত বাস্তব পদক্ষেপ নিয়েছে। এটা আমাদের ভালো লেগেছে।
মানবিক এই উদ্যোগ শুধু একটি পরিবারের জন্য আশার আলো নয়, বরং সামাজিক সহনশীলতা ও আন্তধর্মীয় সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই হোক, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যে আসল মানবতা— জামায়াতের এই পদক্ষেপ যেন সেই বার্তাই বহন করে।
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের জামায়াতের এমপি পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ মাহফুজুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের দুঃসময়ে পাশে থাকাকে আমরা নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করি। কেশব বাবুর পরিবারের জন্য এই ঘর আমাদের মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই নির্মাণ করা হয়েছে।