আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দখলদারিত্ব ও ‘আগ্রাসন’ ঠেকাতে এশিয়ার মিত্রদের সঙ্গে জোট গড়বে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সম্প্রতি এক বক্তব্যে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এক রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় আছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী জাকার্তায় দেওয়া এক বক্তব্যে দক্ষিণ চীন সাগরসহ পুরো ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলকে ‘সবচেয়ে অগ্রসরমান অঞ্চল’ উল্লেখ করে ব্লিনকেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, তাদের মিত্ররা ও দক্ষিণ চীন সাগরের কয়েকজন দাবিদার এই অঞ্চলে যে কোনো আগ্রাসন ও আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত।’
‘ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে আইনের শাসন বজায় রাখা ও এই এলাকায় সবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে গত কয়েক দশকের যে অর্জন, তা ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র তার সব এশীয় মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে।’
‘আর একটি কথা আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- কোনো দেশের ক্ষতি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বরং আমরা চাই, প্রতিটি দেশ যেন কোনো প্রকার জবরদস্তি ও ভয়ভীতি ছাড়াই নিজেদের পথ নিজেরা বেছে নিতে পারে।’
চীন গত প্রায় দু’বছর ধরে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথ দক্ষিণ চীন সাগরে অন্যায়ভাবে নিজেদের দখলদারিত্ব বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে এই সাগরের উপকূলবর্তী দেশ জাপান, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার তিক্ত কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে এই অভিযোগ। বেইজিং যদিও বলে আসছে, চীন কেবল দক্ষিণ চীন সাগরে নিজের সীমানাভূক্ত এলাকার নিরাপত্তা বিধান করছে এবং অন্যদেশের জলসীমা দখলের কোনো অভিপ্রায় চীনের নেই; তবে এই বক্তব্যে মোটেও বিশ্বাস করেনি ওয়াশিংটন।
ব্লিনকেনের মঙ্গলবারের বক্তব্যেও তার আভাস পাওয়া গেছে। জাকার্তায় দেওয়া বক্তব্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনসহ ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলের সব অংশীদারদের প্রতিরক্ষা সহায়তা দেওয়া ও গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান আরও বাড়ানো হবে।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে ‘বিভেদ উস্কে দিচ্ছে’ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এই অঞ্চলে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া। তার পরিবর্তে তারা এই অঞ্চলে বিভদ উস্কে দিচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এই প্রথমবার দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় সফরে গিয়েছেন ব্লিনকেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় এই অঞ্চলের মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তা মেটানোই এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।
সূত্র: রয়টার্স
বিএসডি/ এলএল