বিনোদন প্রতিবেদক
সামিনা চৌধুরী। নামটাই যথেষ্ঠ তার পরিচয়ের জন্য। দীর্ঘ চার দশক ধরে গান করছেন তিনি। সিনেমা, অডিও, ভিডিও সব মাধ্যমেই নিজের কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন তিনি। উপহার দিয়েছেন বেশ কিছু কালজয়ী গান। আজ ২৮ আগস্ট এই গুণী গায়িকার জন্মদিন। ১৯৬৬ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
দীর্ঘ এই পথচলায় দেশ ও সংগীতের নানা চড়াই-উতরাই দেখেছেন সামিনা চৌধুরী। তবে চলমান মহামারিকালে শিল্পীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এই পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছে, শুধুমাত্র গান করে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন।
সামিনা বলেন, ‘আমি যখন কোনো কাজ করি, সেটা থেকে সম্মানী পাই। কিন্তু আমি তো খুব বেশি কাজ করি না। এ কারণে আমার অতো সঞ্চয় নেই। এটা সত্যি কথা। যখন করোনা শুরু হলো, আমাদের সবার কাজ বন্ধ। আমি তখন চিন্তা করলাম, যদি আমি আজ ছেলে হতাম, কিংবা পরিবারের একমাত্র আয়কারী মানুষ হতাম, তাহলে আজকেই রাস্তায় বসার কথা! কারণ আমাদের কোনো কাজ নেই। আমি সামনের মাসের বাড়িভাড়া কীভাবে দেব, খাওয়ার খরচ কীভাবে জোগাড় হবে, সব কিছুই অনিশ্চিত। এই একটা বছর কিন্তু অনেক কষ্ট করেছেন মিউজিশিয়ানরা। আমার স্বামী কাজ না করলে আমি কোথায় যেতাম! আমার মনে হয়, শিল্পীদের সঞ্চয় করে রাখা খুব দরকার। সঞ্চয় থাকলে গান করে জীবিকা নির্বাহ করা যায়। কিন্তু শুধুমাত্র এটার ওপর নির্ভর থাকলে অনেক ক্ষেত্রে কষ্টকর।’
অনেক কিংবদন্তি ও সফল সুরকার-সংগীত পরিচালকের সুরে গান করেছেন সামিনা চৌধুরী। তবে তার স্বপ্নের সুরকারের গানে কণ্ঠ দেওয়ার ইচ্ছেটা অপূর্ণ রয়ে গেছে। সামিনা বলেন, ‘আমার একটাই স্বপ্ন ছিল, আর ডি বর্মণের সুরে গান করা। সেটা অপূর্ণই রয়ে গেছে। আর সলিল চৌধুরীর একটা গানও করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কোনোটাই পূরণ হয়নি।’
ইউটিউব ও ফেসবুকের এই সময়ে কিছু ব্যক্তি ভাইরাল হওয়ার জন্য গাইতে না জানলেও গান প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘এতে সংগীতাঙ্গন ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেউ আমার শত্রু না। আমরা সবাই মানুষ। কিন্তু আমার কথা হলো, জীবন ধারণের জন্য একটা জায়গা নোংরা করে তো লাভ নেই। গান যারা গাইতে পারে না, তাদের অবশ্যই গাওয়া উচিৎ না। ধরুন আমি গাইতে পারি না, কণ্ঠ ভালো নয়, কিন্তু নাম কামানোর জন্য গাইলাম। মানুষ এটা শুনে মজা নিল। কিন্তু দিনশেষে এটার কারণে তো গানের জায়গাটা নষ্ট হলো। তাছাড়া অন্য দেশের মানুষেরা ভাববে, আমাদের দেশের শিল্পী এরাই! কারণ ভাইরাল হওয়ার কারণে ওরা তো এগুলোই পাচ্ছে বেশি। এতে দেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
বিএসডি/এমএম