আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় থাকা তালেবানকে হুঁশিয়ার করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, আফগানিস্তানের মাটি যেন সন্ত্রাসের কাজে না ব্যবহার করা হয়।
গতকাল (মঙ্গলবার) জি২০ এক্সট্রাঅর্ডিনারি সম্মেলনে এই বার্তা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি।
বৈঠকে আফগানিস্তানে ইস্যুত নানা আলাপ হয়েছে। সেখানকার মানুষের অবস্থা, সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গ এবং মানবাধিকার নিয়েও আলোচনা হয়।
ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মোদি বলেন, ভারত-আফগানিস্তানের সম্পর্ক বহু পুরোনো। গত দুই দশকে ভারত আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আফগান নারী এবং তরুণদের জন্য ভারত এগিয়ে এসেছে।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মৌলবাদ, সন্ত্রাস, মাদক-অস্ত্র পাচার বন্ধে জোর দিয়েছেন। এরজন্য যৌথ অভিযানের কথাও বলেছেন তিনি।
গোটা বিশ্বের মানুষকে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আফগানিস্তানের পাশে থাকার জন্য জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র তৈরি করার ডাক দিয়েছেন। যেখানে যৌথভাবে লড়াই করা যাবে মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভার্চুয়াল সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আফগান মানুষদের হৃদয়ে ভারতের বন্ধুত্বের অনুভব রয়েছে। প্রত্যেক ভারতবাসী আফগান মানুষদের ব্যথা অনুভব করে। তারা যে ক্ষুধার্ত এবং অপুষ্টিতে ভোগে সেটা ভারতের মানুষ অনুভব করে। আফগানিস্তানকে মানবাধিকার সহায়তা দিতে প্রয়োজন একটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।
আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বৈঠকের আহ্বান করায় উদ্যোগকে স্বাগত জানান নরেন্দ্র মোদি।
এছাড়া বৈঠকে আফগানিস্তানের মানবিক সংকট নিয়েও আলোচনা করেন জি-২০ নেতারা। তালেবান আফগানিস্তান দখলের আগে সেখানে রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ ছিল আন্তর্জাতিক সহায়তা। এখন বিদেশি সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আফগানিস্তানে সহায়তা বন্ধ করেছে এবং তাদের সম্পদ জব্দ করেছে।
এসব বিষয় সামনে রেখে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস তার বক্তব্যে বলেন, আফগানিস্তান এখন একটি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বহু স্থানে স্বাস্থ্য সেবা এবং অন্যান্য সেবা খাতের কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে। দেশের অর্ধেক মানুষ ইতোমধ্যেই এই সংকটে রয়েছেন এবং তা বাড়ছে।