আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা ও তালেবানবিরোধী নর্দার্ন রেজিস্ট্যান্স ফোর্সের (এনআরএফ) প্রধান আহমেদ মাসুদ আফগানিস্তানে আছেন। কাবুলে ঢুকে তালেবান কয়েক সপ্তাহের চেষ্টায় এনআরএফ নিয়ন্ত্রিত পাঞ্জশির উপত্যকায় ঢুকে পড়ার পর তালেবান অবশ্য দাবি করেছিল, মাসুদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
সূত্রের বরাতে ইরানি সংবাদ সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, মাসুদের তুরস্ক কিংবা অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার গুজব মিথ্যা। আহমেদ মাসুদ এখন নিরাপদ স্থানে রয়েছেন। যোগাযোগ রাখছেন পাঞ্জশিরে তার অনুগত বাহিনী সঙ্গে। তবে ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, পাঞ্জশিরের প্রধান সড়কগুলোর ৭০ শতাংশ এখন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান।
গোটা আফগানিস্তান দখল করার পরও তালেবান যোদ্ধারা পাঞ্জশিরের দখল নিতে পারেনি। উপত্যকায় মাসুদের নেতৃত্বে তালেবানবিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তোলে এনআরএফ বাহিনী। এরপর টানা কয়েকদিন হামলা চালানোর পর তালেবান পাঞ্জশির দখলের দাবি করে। তবে ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্স বা এনআরএফ এখনো সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কাশেম মোহাম্মদি বার্তা সংস্থা ফার্সকে বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তালেবান পাঞ্জশিরে প্রবেশে করেছে এবং এখন উপত্যকার প্রধান সড়কগুলোর ৭০ শতাংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। কিন্তু পাঞ্জশির উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখনো ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্স বা এনআরএফ-এর হাতেই রয়েছে।’
এনআরএফ জানিয়েছে, প্রতিরোধ বাহিনী তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে সমস্ত উপত্যকাজুড়ে কৌশলগত এলাকাগুলোতে অবস্থান করছে। পাঞ্জশির এনআরএফ-এর দুর্গ বলে পরিচিত। এর আগে মাসুদের বাবা আহমেদ শাহ মাসুদ সাবেক সোভিয়েত বাহিনী এবং তালেবান যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে পাঞ্জশিরকে শত্রুমুক্ত করেছিল।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে গোটা আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তালেবান। তবে তালেবান বিরোধীদের দখলেই ছিল পাঞ্জশির। প্রয়াত আফগান গেরিলা কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহকে নিয়ে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে উপত্যকায়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী সম্প্রতি এক অডিও বার্তায় আহমেদ মাসুদ দেশজুড়ে তালেবানবিরোধী প্রতিরোধের ডাক দিয়ে বলেছেন, ‘আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, দেশে কিংবা বিদেশে, আমি আপনাকে আমাদের দেশের মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির জন্য একটি জাতীয় অভ্যুত্থান শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি।’