আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানে নারীদের একটি বিক্ষোভ মিছিলের খবর প্রকাশের ‘অপরাধে’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের রক্ষীবাহিনী। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী কাবুলে ঘটেছে এই ঘটনা।
এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে কাবুলে আফগান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে নারীদের একটি বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। প্রায় ২০ জন নারী হাতে লেখা প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল নিয়ে মন্ত্রণালয়ের ফটকের কাছে আসেন এবং সমাবেশ করেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এএফপির সাংবাদিক জানিয়েছেন, নারীরা সমাবেশ শুরু করলে কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত হন সংবাদ সংগ্রহের কাজে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল তালেবান সরকারের রক্ষীবাহিনীর সদস্যরাও। তাদের কারো হতে ছিল এম ১৬, কারো হাতে ছিল একে ৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল। কয়েকজন পরেছিলেন বুলেট প্রুফ ভেস্টও।
প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলে এই মিছিল ও সমাবেশ। তারপর আচমকা এক তালেবান রক্ষী ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক বিদেশি সাংবাদিককে বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করে। একই সময়ে আরেক ফটো সাংবাদিক অপর এক রক্ষীর লাথির আঘাতে সড়কে পড়ে যান।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন সংবাদিককে আঘাত করেছে তালেবান রক্ষীরা, তবে কারোর আঘাতই গুরুতর নয়। সাংবাদিকদের ওপর হামলার পর স্বাভাবিকভাবেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় নারীদের প্রতিবাদ সমাবেশ।
প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম সংগঠক জাহরা মোহাম্মদি এএফপিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আজকের ঘটনায় আরেকবার প্রমাণিত হলো- তালেবান শাসনের অধীনে দেশি-বিদেশি সাংবাদিক কিংবা নারী- কেউই নিরাপদ নয়।’
‘তালেবান আমাদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, কিন্তু অবশ্যে তা পুনরায় ফিরিয়ে দিতে হবে তাদের। মেয়েদের স্কুলকগুলো অবিলম্বে খুলে দিতে হবে।’
‘আমরা সব আফগান কিশোরী ও তরুণীদের উদ্দেশে বলতে চাই, তালেবানদের ভয় পেয়ো না, নিজেদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নামো।’
গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানের জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হয় কট্টর সুন্নি ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবান। ক্ষমতা দখলের পরপরই কো এডুকেশন ও মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয় এই গোষ্ঠী।
প্রায় আড়াই মাস ধরে এই স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে দেশটির নারী শিক্ষা ব্যবস্থা।
অবশ্য জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের কাছে তালেবান সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে- ‘খুব দ্রুতই’ ফের চালু করা হবে আফগানিস্তানের মেয়ে স্কুলগুলো। দেশটির ৩৪টি প্রদেশের ৫টিতে ইতোমধ্যে মেয়ে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে বলেও জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছে তালেবান।