আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তানে বিদ্যমান সংঘাতের পট পরিবর্তনে উদ্বিগ্ন দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষমতাধর দেশ ভারত। রাজধানী কাবুলের দিকে তালিবান যোদ্ধাদের কুচকাওয়াজে সাউথ ব্লকের নীতি নির্ধারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ গভীর হচ্ছে। সেই উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে এবার জানা গেল, আফগান সেনাবাহিনীকে ‘উপহার’ হিসেবে ভারতের দেওয়া একটি অ্যাটাক হেলিকপ্টারের দখল নিয়েছে তালিবান।
২০১৯ সালে বন্ধু রাষ্ট্র আফগানিস্তানের বায়ুসেনাদের চারটি ‘Mi-35’ অ্যাটাক হেলিকপ্টার দিয়েছিল ভারতের মোদী সরকার। অত্যাধুনিক ওই গানশিপগুলো রকেট ও মিসাইল থেকে শুরু করে অনেক রকমের বিধ্বংসী হাতিয়ার বহনে সক্ষম। তার মধ্যে কুন্দুজ বিমানবন্দরে রাখা ছিল একটি হেলিকপ্টার।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, আফগান সেনাবাহিনীকে ভারত যে কয়েকটি এমআই-৩৫ হেলিকপ্টার গানশিপ দিয়েছিল, তার মধ্যে বুধবার (১১ আগস্ট) একটি কুন্দুজ বিমানবন্দর থেকে নিয়ে নিয়েছে তালিবান।
যদিও অপর একটি স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কপ্টারটি দীর্ঘদিন যাবত অকেজো হয়ে পড়ে ছিল। ফলে তালিবান বাহিনী সেটিকে কোনো কাজেই লাগাতে পারবে না। তবে বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এরই মধ্যে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনাবাহিনীর সদস্যদের সরানোর কাজ শুরু করেছেন। তার সিদ্ধান্ত, এখন থেকে আফগানরাই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রক হবেন।
এর পরপরই তালিবান যোদ্ধাদের একের পর একে আক্রমণের মুখে আফগান সরকার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে। যার ধারাবাহিকতায় গেল ছয় দিনে মোট ৯ প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিতে সমর্থ হয় সংগঠনটির যোদ্ধারা। এবার সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে নিজেদের পতাকা উড়িয়েছে তালিবান।
এ দিকে তালিবান যোদ্ধারা সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে আফগান প্রশাসন। সশস্ত্র দলটির অগ্রযাত্রা দ্রুত অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে আফগান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়ালি মোহাম্মদ আহমাদজাইকে এরই মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমনকি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক কমান্ডারদের প্রতি সরকারকে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কাবুলকেই তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে বলার পরপরই আঞ্চলিক কমান্ডারদের শরণাপন্ন হন তিনি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
বিএসডি/এমএম