আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানের একটি সামরিক জেট বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উজবেকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলছেন, বিমানটি উজবেকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। যদিও বিধ্বস্ত সেই বিমানটিতে ঠিক কতজন আরোহী ছিল বা তাদের মধ্যে কেউ এখনো বেঁচে আছেন কীনা তা ওই মুখপাত্র নিশ্চিত করেননি। খবর বিবিসি নিউজের।
যদিও আফগান সীমান্তবর্তী উজবেকিস্তানের সুরকোনদারিও প্রদেশের চিকিৎসক বেপুলাত ওকবোয়েভ ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির কাছে বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, আফগান সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত দুজন ব্যক্তিকে গত রবিবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের শরীরের সাথে প্যারাসুট জড়িয়ে ছিল।
সোমবার (১৬ আগস্ট) উজবেক সরকার জানিয়েছে, সীমান্ত অতিক্রম করার দায়ে এখন পর্যন্ত ৮৪ আফগান সৈন্যকে আটক করা হয়েছে। সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন তালেবানের যোদ্ধারা আফগানিস্তানের একের পর এক অঞ্চল দখল করে নেওয়ার পর থেকেই আফগান সেনাদের মধ্যে দেশটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার হিড়িক শুরু হয়। এমনকি বহু বেসামরিক নাগরিকও গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় নিজ জন্মস্থান ছাড়তে বাধ্য হন।
বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনীর শাসন ছিল। এর মধ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী খ্যাত আল-কায়েদা নেতাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা জোট দেশটিতে যৌথ অভিযান শুরু করে। মূলত এর মাধ্যমেই অঞ্চলটিতে তালেবান শাসনের অবসান ঘটে।
দীর্ঘ ২০ বছর যাবত চলা সেই অভিযানগুলোতে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতাদের দমন করা হলেও ‘শান্তিরক্ষার স্বার্থে’ দেশটিতে ঘাঁটি গেড়ে অবস্থান করছিল মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সেনারা। যদিও শেষ পর্যন্ত অন্যান্য পশ্চিমা দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রও নিজেদের সেনাবাহিনীকে আফগান ভূখণ্ড থেকে ফিরিয়ে নিতে শুরু করে।
মূলত এর পর থেকেই আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চল দখলের জন্য অভিযানে নামে তালেবান। যার ধারাবাহিকতায় এবার রাজধানী কাবুলের ক্ষমতার মসনদ উঠতে যাচ্ছে বাহিনীটির যোদ্ধাদের হাতে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ অভিবাসন ভিসার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২০০ আফগান নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন। এছাড়া আরও সাড়ে তিন হাজারের অধিক মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন। মূলত আফগান দোভাষীসহ মার্কিন বাহিনীর সহায়তাকারী নাগরিকদেরই এবার প্রাধান্য দিচ্ছে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত আফগানিস্তানে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া দেশটি।
বিএসডি/এমএম