আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জুন মাসে সংঘাত চলার সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে হত্যার চেষ্টা করেছিল ইসরায়েল। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন পেজেশকিয়ান নিজে।
গতকাল রোববার বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে সাক্ষাৎকার দেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। সেখানে কার্লসনের এক প্রশ্নের উত্তরে পেজেশকিয়ান বলেন, “হ্যাঁ, তারা আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল এবং চেষ্টাও করেছিল; কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে।”
“সংঘাত শুরুর কয়েক দিন পর তেহরানে আমি একটি জরুরি বৈঠকে বসেছিলাম এবং যে এলাকায় আমি ছিলাম….হঠাৎ পুরো এলাকাজুড়ে বোমাবর্ষণ শুরু হয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইসরায়েলি বাহিনী এ হমলা চালিয়েছিল।”
ইরানের পরমাণু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ও সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করে গত ১৩ জুন থেকে থেকে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। অভিযান শুরুর কিছু সময় পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। তাই তেহরানকে এই প্রকল্প থেকে বিরত রাখতে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ২৫ জুন যুদ্ধবিরতি হয় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে। ইরানের পরমাণু প্রকল্প সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ছিল ফার্দো, ইসফাহান ও নানতাজ শহরে। ১২ দিনের এই সংঘাতে তিন শহরের স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, নিহত হন ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরিসহ বেশ কয়েকজন প্রথম সারির সেনা কমান্ডার এবং অন্তত ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানী।
ইসরায়েল হামলা চালানোর আগে নিজেদের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংলাপ চলছিল তেহরানের। সংঘাতের সময় তা বন্ধ হয়ে যায় এবং এখনও তা শুরু হয়নি।
টাকার কার্লসনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান জানান, ওয়াশিংটন যদি আগ্রহী হয়— তাহলে ফের সংলাপ শুরু করতে আপত্তি নেই তেহরানের। তবে এক্ষেত্রে যে তেহরান আস্থার সংকটে ভুগছে— তা ও উল্লেখ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।
“আমাদের ফের আলোচনায় যেতে আপত্তি নেই; কিন্তু এক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। আমরা কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের বিশ্বাস করব? মনে করুন, আমরা আলোচনায় প্রবেশ করলাম— কিন্তু তখন যে ইসরায়েলি বাহিনী ফের হামলা চালাবে না— এমন কোনো নিশ্চয়তা কি আছে?” সাক্ষাৎকারে বলেন পেজেশকিয়ান।
সূত্র : এএফপি