ধর্ম ডেস্ক:
মানুষের জীবনে নানা ধরনের সমস্যা আপতিত হয়। তখন মানুষ কষ্ট পায়, দুঃখ-ব্যথায় জর্জরিত হয়। কেউ কেউ বিপদে ধৈর্য হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। কারও কারও স্বাভাবিক জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পায়। কী করবেন ও কী করা উচিত— তা নির্ণয় করতে পারেন না।
এই ধরনের ত্রাহি অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষ আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করে। তার কাছে সহযোগিতার প্রার্থনা করে। যেন তিনি সমস্যামুক্ত করে দেন। বিপদ থেকে মুক্তি দান করেন। মানুষ কোন পথে ও কীভাবে আল্লাহর সাহায্য কামনা করবে, সেই উপায় ও পথও তিনি বাতলে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ ও সবরের (ধৈর্য) মাধ্যমে আমার (আল্লাহর) সাহায্য কামনা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৩)
বস্তুত সৎ ও পুণ্যের পথে চলা যদি কারো পক্ষে কষ্টকর বলে মনে হয়, তবে এর একমাত্র প্রতিষেধক হচ্ছে ধৈর্য-সহিষ্ণুতা ও নামাজ। আর এ দুটি কাজ থেকে মুমিন-মুসলমানরা যে শক্তি লাভ করবে; সেটা তার পথচলাকে সহজতর করে দেবে। এছাড়াও মহানবী (সা.) কঠিন বিপদাপদের মুহূর্তে আল্লাহর সাহায্য লাভের কথা বলেছেন। এমনকি আল্লাহর সাহায্য লাভের দোয়াও শিখিয়ে দিয়েছেন।
আরবি :
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ
উচ্চারণ : লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহর সহযোগিতা ছাড়া কারো (ভালো কর্মের দিকে) এগিয়ে যাওয়া এবং (খারাপ কর্ম থেকে) ফিরে আসার সামর্থ্য নেই।
আবু মুসা (রা.) বলেন, আমরা কোনো এক সফরে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন মানুষ উচ্চৈ স্বরে তাকবির পাঠ করছিলেন। রাসুল (সা.) বলেন, হে মানবজাতি, তোমরা জীবনের ওপর সদয় হও। কেননা তোমরা তো কোনো বধির অথবা অনুপস্থিত সত্তাকে ডাকছ না। নিশ্চয় তোমরা ডাকছ সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী সত্তাকে, যিনি তোমাদের সঙ্গেই আছেন। আবু মুসা (রা.) বলেন, আমি তাঁর পেছনে ছিলাম। তখন আমি বলছিলাম, আল্লাহর সহযোগিতা ছাড়া কোনো ভালো কাজের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এবং মন্দ কর্ম থেকে ফিরে আসার সামর্থ্য নেই। তখন (সা.) বলেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনে কায়স, আমি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনসমূহের মধ্যে কোনো একটি গুপ্তধনের কথা জানিয়ে দেব? আমি বললাম, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসুল, অতঃপর তিনি বলেন, তুমি এই (উপরোক্ত) দোয়া পড়ো। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৫৫)
আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার আরও অসংখ্য দোয়া রয়েছে। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো-
আরবি :
حسبُنا اللَّهُ ونعمَ الوَكيلُ على اللَّهِ توَكَّلنا
উচ্চারণ : হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, আলাল্লাহি তাওয়াক্কালনা।
অর্থ : মহান আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধানকারী। আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম।
আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, কিয়ামতের বর্ণনা শুনে সাহাবারা ভীত হলে রাসুল (সা.) এই দোয়া পড়তে বলেন। (বুখারি, হাদিস : ২৪৩১; তিরমিজি, হাদিস : ২৪৩১)
বিএসডি/আইপি