ধর্ম ডেস্ক,
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘রমজানের পর আল্লাহর মাস মহররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/৩৬৮; জামে তিরমিজি, হাদিস : ১/১৫৭)
মহররমের রোজার মধ্যে আশুরার রোজার ফজিলত আরও বেশি। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল (সা.) কে রমজান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সঙ্গে রোজা রাখতে দেখেছি অন্য সময় তা দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি : ১/২১৮)
হাদিসের ভাষ্যে নবীজি ইরশাদ করেন, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সা.) যখন হিজরত করে মদিনা পৌঁছেন, তখন তিনি দেখলেন যে মদিনার ইহুদি সম্প্রদায় আশুরার দিনে রোজা পালন করছে। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করেন, আশুরার দিনে তোমরা রোজা রেখেছ কেন? তারা উত্তর দিল, এই দিনটি অনেক বড়। এই পবিত্র দিনে মহান আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন আর ফিরআউন ও তার বাহিনী কিবতি সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ হজরত মুসা (আ.) রোজা রাখতেন, তাই আমরাও আশুরার রোজা পালন করে থাকি। তাদের উত্তর শুনে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, হজরত মুসা (আ.)-এর কৃতজ্ঞতার অনুসরণে আমরা তাদের চেয়ে অধিক হকদার। অতঃপর তিনি নিজে আশুরার রোজা রাখেন এবং উম্মতকে তা পালন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। (বুখারি-৩৩৯৭, মুসলিম-১১৩৯)
ইহুদিরাও আশুরার দিন রোজা পালন করত বিধায় মুসলমানদের জন্য আশুরার পূর্বের বা পরের দিন মিলিয়ে রোজা রাখতে আদেশ করেছেন, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত ‘মহানবী (সা.) যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইহুদি-নাসারারা তো এই দিনটিকে বড়দিন মনে করে। (আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি, তাহলে তো তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে। তাদের প্রশ্নের উত্তরে রাসূল (সা.) বললেন, ‘তারা যেহেতু এ দিন একটি রোজা পালন করে) আগামী বছর ইনশাআল্লাহ আমরা এই ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করব। (মুসলিম-১১৩৪)
অপর হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘তোমরা আশুরার রোজা রাখ এবং ইহুদীদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে; আশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোজা রাখো। (মুসনাদে আহমদ ১/২৪১) অন্য হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোজার কারণে আল্লাহ তায়ালা অতীতের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’ (সহিহ মুসলিম ১/৩৬৭; জামে তিরমিযি ১/১৫৮)
অন্য হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোজার কারণে আল্লাহ তায়ালা অতীতের এক বছরের (সগিরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (সহিহ মুসলিম : ১/৩৬৭; জামে তিরমিজি : ১/১৫৮)
আশুরার রোজা সম্পর্কে এক হাদিসে আছে, ‘তোমরা আশুরার রোজা রাখ এবং ইহুদিদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে— আশুরার আগে বা পরে আরও একদিন রোজা রাখ।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১/২৪১)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন, ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি, তাহলে ৯ তারিখেও অবশ্যই রোজা রাখব।’ (সহিহ মুসলিম : ১/৩৫৯)
বিএসডি/আইপি