দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনাভাইরাসে আগের দিনের চেয়ে মৃত্যু কমলেও শনাক্ত বেড়েছে। নতুন করে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৫৮ জনের, যা গত ৭৪ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড।
আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে গত বুধবার ৮৫ জনের মৃত্যু হয়। করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৫ হাজার ৭২৭ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টার চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ১২ এপ্রিল। সেদিন করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ২০১ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আজকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩০ হাজার ৩৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৯৩।
দেশে এ পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৮ লাখ ৭২ হাজার ৯৩৫। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৮৬৮ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৯৪ হাজার ৭৮৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৩০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষ ৫৫ জন ও নারী ২৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এরপর রাজশাহী বিভাগে ২০ জন, ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে ৭ জন করে, সিলেটে ৫ জন, ময়মনসিংহ ও বরিশালে ৩ জন করে ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।
দেশে এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয় । পরে তা আরও বাড়িয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণ পরিস্থিতি এপ্রিলের মতো ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে ঢাকাকে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকার আশপাশের চারটি জেলাসহ মোট সাতটি জেলায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের চলাচল ও কার্যক্রম ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই সাত জেলা হলো মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ।