সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কথাবার্তা ও বাংলাদেশের পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলার কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হচ্ছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য আদম তামিজী হক।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আদম তামিজী হক ইস্যুতে আজ রোববার জরুরি বৈঠকে বসে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির বাসায় অনুষ্ঠিত হওয়া বৈঠকে তামিজী হককে বহিষ্কারের বিষয়ে মত দেন মহানগরের নেতারা।
আরও পড়ুন- তৃণমূলেও নির্বাচনী হাওয়া, দৃষ্টি ‘ঢাকা’
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, আজকে কচি ভাইসহ আমরা ১০-১২ জন নেতা তার (কচি) বাসায় বসেছিলাম। দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের ভাই সিঙ্গাপুরে আছেন। তিনি আসার পর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, কার সাথে কার কী সমস্যা হয়েছে, এটা আমরা জানি না। কিন্তু তার ভিডিওটি আমাদের যথেষ্ট বিব্রত করেছে। তিনি শুধু দলীয় বিষয়ে বলেছেন সেটা নয়, তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট পুড়িয়েছেন, এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। সে কারণে আমরা তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করব। তিনি আওয়ামী লীগের বিষয়ে অনেক নেতিবাচক কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন- ঢাকা-১৩ : নানক, সাদেক নাকি বজলু?
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি বলেন, আমি বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে শুনেছি। যদি সত্যি সত্যি এমন কিছু বলে থাকেন তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি পাসপোর্ট পুড়িয়ে থাকেন তাহলে সেটা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ হয়েছে। এটার অপমান করলে অবশ্যই দেশকে অপমান করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার বাসায় বসেছিলাম। সাংগঠনিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি। আলোচনায় এই বিষয়টি ছিল। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশে আসলে তার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
আরও পড়ুন- জাতীয় নির্বাচনের আগেই ‘স্মার্ট’ হচ্ছে আওয়ামী লীগ
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, আদম তমিজী হক নিজের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলছেন।
সেই ভিডিওতে আদম তমিজী হক বলেন, আওয়ামী লীগের একজন নেতা ছিলাম আমি। আওয়ামী লীগ আমার ১ হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছে। আমাকে দেশ ছাড়া করেছে। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর চেষ্টা করছে। যে কারণে আমি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করলাম। এ দেশের নাগরিকত্ব আর চাচ্ছি না। কারণ, এদেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা আমার নেই।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলকে নিয়ে ব্যবসায়ী হক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঢাকা মহানগর উত্তর তাঁতী লীগের প্রধান উপদেষ্টা আদম তমিজী হকের ফেসবুক স্ট্যাটাস ও লাইভ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এর আগে টঙ্গীতে হক গ্রুপের কারখানা দখলের অভিযোগ তুলে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলকে নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস ও লাইভে আসেন তমিজী হক।
আরও পড়ুন- ‘চাওয়া একটাই, মাথার ওপর ছায়া হয়ে বেঁচে থাকুক শেখ হাসিনা’
আদম তমিজী নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, প্রিয় শুভাকাঙ্খী, অনেকেই আপনারা এতদিন আমাকে ‘চুতিয়া’ ভেবেছেন। প্রয়োজনে আজই আমি আমার ক্ষমতার আংশিক রূপ দেখাতে পারি। আমি বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের ক্ষমতাসীন মন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে নামাতেও পারি। সুতরাং আমার সম্পত্তির দিকে হাত বাড়ানোর আগে খুব বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
এরপর আরও একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, প্রিয় নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী), আমি এবং আমার দ্বিতীয় স্ত্রী দুবাই থেকে ঢাকার পথে। বাকি পারিবারিক সদস্যরা আজকে রাতে রওনা করবে এবং সকালে পৌঁছাবে। এমপি রাসেল এবং তার চাচার ভয়ানক থাবা থেকে আমরা আমাদের রিজিক বাঁচানোর লক্ষ্যে আসতেছি।
বিএস/এলএম