জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায় ও বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে এরা আওয়ামী লীগ আজকে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে।’
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মহানগর নাট্যমঞ্চে বিএনপির উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া এ দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তিনি তার দুই শিশু তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর হাত ধরে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্বারা গ্রেফতার হয়ে তিনি ক্যান্টনমেন্টের কারাগারে বন্দি ছিলেন ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আজকে আপনারা তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছেন। এখন তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছেন, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।’
দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেখুন এই ৫০ বছরে সরকার দাবি করে যে, বাংলাদেশে উন্নয়নের নাকি বন্যা বইয়ে দিয়েছে। এই ৫০ বছরে গরীব আরও গরীব হয়েছেন। এখানে কিছু সংখ্যক আওয়ামী লীগের সহায়তাপুষ্ট, মদদপুষ্ট কিছু বড়লোক আরও ধনী হয়েছেন।’
বিএনপির মহাসচিবের অভিযোগ, ‘আজকে আমাদের দেশের কৃষকেরা তারা তাদের পণ্যের দাম পাচ্ছেন না, শ্রমিকেরা তাদের শ্রমের ন্যায্য পাওনা মজুরি পাচ্ছেন না। আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে, আমাদের অর্থনীতিকে সত্যিকার অর্থে পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে হবে। আজকে সময় নেই। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি ও ব্যক্তিদেরকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় যে শক্তি আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে তাদেরকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই সরকার একটি দানবীয় সরকার। আজকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশের একটি সংস্থার কর্মকর্তার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার খবর। আজকে সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে তিনি কোথাও জায়গা পাচ্ছেন না, তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। এসব কাদের জন্য হচ্ছে? আজকে যারা ক্ষমতায় জোর করে দখল করে আছে তাদের জন্য, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের জন্য।’
বিএনপি প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া প্রমুখ।