সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
অনুষ্ঠিত হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর অর্থায়নে, ৪ বছর মেয়াদী প্রকল্প “ক্ষমতায়ন ” এর একদিন ব্যাপি কর্মশালা যার মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে ক্ষুদ্র কৃষকদের স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও নীতি নির্ধারণের সাথে সম্পৃক্ত করা এবং স্থানীয় গণতান্ত্রিক শাসনকে শক্তিশালী করা।
উক্ত কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, নির্বাহী চেয়ারম্যান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বি এ আর সি),মিস লায়লা জেসমিন বানু, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, শিক্ষা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি দল, শাহেদ ফেরদৌস, কান্ট্রি ডাইরেক্টর বাংলাদেশ ট্রেডক্রাফ্ট এক্সচেঞ্জ সহ আরো অনেকে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সত্তেও বাংলাদেশ দারিদ্রতা, সুশাসন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মৌলিক বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। তবে কেন্দ্রিভূত সরকার কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা, সরকারের দায়িত্ব পালনে বাঁধার সৃষ্টি করেই যাচ্ছে।
এ কারণে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে জাতিগত সংখ্যালঘু এবং শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা সরকারি সহযোগীতা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। বাংলাদেশের ৪৮% মানুষ কৃষির সাথে যুক্ত, প্রায় ৭০% মানুষ জীবিকার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নিরভরশীল। বাংলাদেশের কৃষিজীবিদের ৮০% ক্ষুদ্রচাষী।
অথচ স্থানীয় সরকারের কর্মসূচীগুলোর সুফল তাদের কাছে পৌছাতে পারছে না। নীতিনির্ধারক ও দায়িতবশীলদের কছে নিজেদের প্রয়োজনীতা ও অধিকার তুলে ধরা মত সচেতনতা, আস্থা, দক্ষতা এমনকি সাংগঠনিক উদ্যোগও আমাদের কৃষকদের নেই।
এর সাথে এটাও লক্ষনীয় যে নীতিনির্ধারক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা এ গ্রামবাংলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চাহিদাগুলো প্রায়সই উপেক্ষীত হচ্ছে এর ফলে তারা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে পারছে না।
এ বিষয়গুলোবিবেচনায় রেখে তৃণমূলের এ সকল মানুষদের নিয়ে গঠিত সংস্থাগুলোর পরিচালন প্রক্রিয়া, জবাবদিহীতা ও সক্ষতাকে আরো শক্তিশালী করতে ট্রেডক্রাফ্ট এক্সচেঞ্জ একটি কর্মপ্রক্রিয়া প্রস্তাব করে। এ পরিকল্পনাটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর আর্থিকসহযোগীতায় “ক্ষমতায়ন” প্রকল্প নামে বাস্তবায়িত হয়েছে।
এ প্রকল্পে সহযোগী হিসেবে ট্রেডক্রাফ্টএক্সচেঞ্জএরসাথে আন্তর্জাতিক সংস্থা ক্রিস্টিয়ান এইড, সলিডারিটি ইন্টারন্যাশনাল অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ৩ টি আঞ্চলিক এনজিও রুরাল ডেভলপমেন্ট সংস্থা (আর ডি এস), গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা (জি ইউ কে) এবং সুশীলন এ উদ্যোগেঅংশগ্রহন করে।
এ প্রকল্পটিতে চারটি ভিন্ন কর্ম পরিকল্পনা ছিল। এ কর্ম পরিকল্পনা মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষন কর্মসূচী ও কর্মশালা অন্তর্ভুক্ত ছিল। যা ক্ষুদ্র কৃষক নিয়ন্ত্রিত সামাজিক সংগঠন গুলোকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছে, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছে, পাশাপাশি অর্থ ব্যবস্থাপনা, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি, লিঙ্গ ভিত্তিক সমতার ধারণা, কৃষিভিত্তিক ব্যবসা এর ক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এর সাথে সুসম্পকে বজায় রেখে কি করে কাজ করা যায় সে সম্পর্কেও তাদের প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও এ প্রকল্পটি স্থানীয় কর্মকর্তাদের গ্রাহক কেন্দ্রিক সেবা সংক্রান্ত প্রশিক্ষন প্রদান করেছে। ক্ষমতায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে, ক্ষুদ্র কৃষক নিয়ন্ত্রিত সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মধ্যে নির্ভরতা, দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও ক্ষুদ্র কৃষক নিয়ন্ত্রিত সামাজিক সংগঠন গুলোর মধ্যে সৃজনশীল ও সমন্বিতসম্পর্ক জোরদার করতে সহায়তা করেছে। যা ক্ষুদ্র কৃষক, বিশেষ করে নারী ও জাতিগত সংখ্যালঘু এবং শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের সামাজিক ও আর্থিক অবস্থার উন্নতি ত্বরান্বিত করেছে ।
বিএসডি/জেজে