ক্রীড়া ডেস্ক,
ইউরোর ফাইনালে টাইব্রেকারে জর্জিনিয়োর ব্যর্থতা ঢাকা পড়েছিল সতীর্থদের নৈপুণ্যে। কিন্তু এবার তার পেনাল্টি মিস হয়ে থাকল ইতালির হতাশার কারণ। সুইজারল্যান্ডের মাঠে যথেষ্ট সুযোগ তৈরি করেও পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারল না ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।
সুইজারল্যান্ডের বাসেলে রোববার রাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়।
জয় না মিললেও দারুণ এক কীর্তি ঠিকই গড়েছে ইতালিয়ানরা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার নিজেদের করে নিয়েছে তারা ৩৬ ম্যাচ না হেরেছে।
ইতালি পেছনে ফেলেছে ব্রাজিল ও স্পেনকে। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত টানা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডটি গড়েছিল ব্রাজিল। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সময়ে সেই রেকর্ড স্পর্শ করে স্পেন।
কাতার বিশ্বকাপের ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইয়ে প্রথম তিন ম্যাচে জয়ের পর এই নিয়ে টানা দুটি ড্র করল ইতালি। গত সপ্তাহে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ১-১ ড্র করেছিল তারা। আর প্রথম দুই রাউন্ডে জয়ের পর প্রথম পয়েন্ট হারাল সুইসরা।
গত জুন-জুলাইয়ে হওয়া ইউরো জয়ের পথে গ্রুপ পর্বে সুইজারল্যান্ডকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল রবের্তো মানচিনির দল। কিন্তু এবার সম্ভাবনা জাগিয়েও জয়ের স্বাদ পেল না আজ্জুরিরা।
পুরো ম্যাচে বল দখলে প্রায় সমতা থাকলেও আক্রমণে এগিয়ে ছিল ইতালি। শেষ দিকে অবশ্য চিত্র কিছুটা উল্টে যায়। ইতালির মোট ১০ শটের সাতটি ছিল লক্ষ্যে। আর সুইজারল্যান্ডের আট শটের মাত্র দুটি লক্ষ্যে থাকে।
ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে অবশ্য বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করে ইতালি, একাদশ মিনিটে পায় প্রথম সুযোগ। কিন্তু চিরো ইম্মোবিলের শট রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর লরেন্সো ইনসিনিয়ের নেওয়া শট ঠেকান গোলরক্ষক।সাত মিনিট পর দলকে ভীষণভাবে হতাশ করেন দোমেনিকো বেরার্দি। প্রতি-আক্রমণে সতীর্থের থ্রু বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে একা পেয়ে দুর্বল শট নেন সাস্সুয়োলো ফরোয়ার্ড। বল নিযন্ত্রণে নিতে তেমন সমস্যা হয়নি ইয়ান সমেরের।
এভাবে বারবার প্রতিপক্ষের সীমানায় আক্রমণ শানাতে থাকে ইতালি। তবে ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা ও প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় সাফল্য মিলছিল না। এর মাঝেই ৩১তম মিনিটে এক পাল্টা আক্রমণে কর্নার আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা। ওই কর্নারে উড়ে আসা বল ইতালির ডিফেন্ডার দি লরেন্সোর গায়ে লেগে দিক পাল্টে পোস্ট ঘেঁষে লাগে পাশের জালে।
ব্যর্থতার ষোলোকলা যেন পূর্ণ হয় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে। সুইসদের ডি-বক্সে একা ঢুকে পড়া বেরার্দিকে ছুটে এসে ফাউল করে বসেন ডিফেন্ডার রিকার্দো রদ্রিগেস। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি; কিন্তু যে দুর্বল স্পট কিক নিলেন জর্জিনিয়ো, তা ঠেকাতে কোনো সমস্যাই হয়নি সমেরের।
জুলাইয়ে ইউরোর ফাইনালের টাইব্রেকারেও শট মিস করেছিলেন উয়েফার এ বছরের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়ী জর্জিনিয়ো।
শেষ দিকে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে সুইজারল্যান্ড। উঠতে থাকে পাল্টা-আক্রমণে। বেশ কয়েকবার ভীতিও ছড়ায়, যদিও নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউই। ইতালিও অবশ্য পারেনি আর পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে।
শেষ পর্যন্ত তাই জর্জিনিয়োর ওই ব্যর্থতাই বারবার ঘুরেফিরে আসে আলোচনায়।
পাঁচ ম্যাচে তিন জয় ও দুই ড্রয়ে ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষে ইতালি। তিন ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সুইজারল্যান্ড।
পাঁচ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে বুলগেরিয়া। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। লিথুয়ানিয়ার অর্জন শূন্য।
বিএসডি/এএ