আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগ দাবি করেছে দেশটির পার্লামেন্টের মূল বিরোধী দল মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। দলটির অন্যতম নেত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মরিয়ম বলেন, ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের ‘সীমাহীন দুর্নীতি’ এবং গত সাড়ে তিন বছর ধরে বিরোধী দলগুলোর ওপর সরকারি বাহিনীর নির্যাতন ও হয়রানির দায় মাথায় নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত ইমরানের।
মরিয়ম আওরঙ্গজেব মূলত ক্ষিপ্ত হয়েছেন ইমরান খানের সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারের জেরে। গত শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য সরাসরি তার পূর্বসূরী পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও পিএমএল-এন সরকারদ্বয়কে দায়ী করেন।
এই দুই দলকে পুরোপুরি ‘পরিবারতান্ত্রিক দল’ উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দুর্নীতি, অর্থসংকটসহ পাকিস্তানে যত সমস্যা রয়েছে, সে সবের শুরু হয়েছে পিপিপি ও পিএমএল-এন সরকারের আমলে। এমনকি, পিপিপির নেত্রী বেনজির ভুট্টোর মৃত্যুর জন্যও মূলত দায়ী সেই দলের পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুটি দল সাংগঠিকভাবে যে রাজনীতির চর্চা করে, তাকে এক কথায় মাফিয়াতন্ত্র বলা চলে। সাড়ে তিন বছর আগে জাতীয় নির্বাচনের সময় আমি যখন প্রচারাভিযান চালাচ্ছিলাম, সেসময় মনে হচ্ছিল- আমি মাফিয়াদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। মিডিয়াও আমার পক্ষে ছিল না’
ইমরানের মন্তব্যের সমালোচনা করে রোববার মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, ‘ইমরান তার নিজের ব্যর্থতা ও দলের সদস্যদের দুর্নীতি ঢাকার জন্য বিরোধী দল ও বিগত সরকারগুলোকে দোষারোপ করছেন।’
পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা নওয়াজ শরিফ বর্তমানে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে আছেন। তিনি দেশে ফেরার আগ পর্যন্ত দলটির ভারপ্রাপ্ত নেতার দায়িত্বে আছেন মরিয়ম আওরঙ্গজেব।
নওয়াজ এবং পিপিপি নেত্রী বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলি জারদারি- উভয়ের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
‘তিনি পিএমএল-এনকে দুর্নীতির জন্য দায়ী করেছেন। আমাদের তিনি উল্লেখ করেছেন মাফিয়া হিসেবে। কিন্তু সত্য হলো- দেশের সবচেয়ে বড় মাফিয়ারা এখন তার দলে আছেন এবং গত সাড়ে তিন বছরে পাকিস্তান থেকে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে এই মাফিয়ারা। ইমরান একে তো তাদের বিচারের আওতয়ায় আনতে পারেননি, উপরন্তু এখন বিরোধী দলকে দোষারোপ করছেন।’
‘তিনি যদি সত্যি সত্যি দেশবাসীকে মুক্তি দিতে চান, তাদের সুখী দেখতে চান- তাহলে এই মুহূর্তে তার পদত্যাগ করা উচিত।’
বিএসডি/এসএফ