ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামাস ও ইসরায়েলের সংঘাত চলছে এক মাস ধরে। ইসরায়েলি আগ্রাসন যতই তীব্র হচ্ছে, চলমান এই সংঘাত আঞ্চলিক রূপ নেওয়ার ঝুঁকিও ততই বাড়ছে। এমনকি লেবানন সীমান্তে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ গুলি বিনিময়ও নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে নতুন করে ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এমনকি হামলায় ইসরায়েলি ঘাঁটি এবং বিমানবন্দরের কার্যকলাপ সাময়িকভাবে বন্ধ হয় বলেও দাবি তাদের।
অবশ্য ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীর হামলার দাবি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা বলেছে, তারা সোমবার ইসরায়েলে নতুন করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। হুথিরা বেশ শক্তিশালী এবং তারা আরব উপদ্বীপের দক্ষিণে অবস্থিত দরিদ্র এই দেশটির বেশ বড় অংশ নিজেদের দখলে রেখেছে।
হুথি বিদ্রোহীরা বেশ জোর দিয়ে বলেছে, তাদের চালানো সর্বশেষ এই হামলা ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি এবং বিমানবন্দরগুলোতে সাময়িকভাবে কার্যকলাপ বন্ধ করে দিয়েছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
হুথি গোষ্ঠীর সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেছেন, ‘ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী… দখলকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি শত্রুদের বিভিন্ন সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুতে গত কয়েক ঘণ্টায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তাদের এই হামলার ফলস্বরূপ ইসরায়েলি ঘাঁটি এবং বিমানবন্দরের কার্যকলাপ কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল।’
ইয়াহিয়া সারি এক্সে আরও বলেছেন, যতক্ষণ না গাজায় আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নৃশংস আগ্রাসন বন্ধ না হচ্ছে হুথি বাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে আরও গুণগত সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে… ।
মূলত গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ইসরায়েলে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায়ই হামলার চেষ্টা করেছে হুথিরা। গত মাসে তাদের ছোড়া কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করা হয় বলেও জানিয়েছিল ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
এছাড়া সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর ওপর একের পর এক আক্রমণের পাশাপাশি হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই গুলি বিনিময় ও হামলা-পাল্টা হামলা হয়েছে।
বিএসডি / এলএম