আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় দুই শহর বেইত লাহিয়া এবং জাবালিয়ায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ব্যাপক বিমান হামলায় বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এ তথ্য জানিয়ে বলেন, নিহতদের মধ্যে ৭৫ জন বেইত লাহিয়া শহরের এবং বাকি ২৫ জন জাবালিয়া ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার।
গত ৫ অক্টোবর থেকে উত্তর গাজায় অভিযানে বিশেষভাবে জোর দিয়েছে আইডিএফ। তারপর থেকে এ পর্যন্ত উত্তর গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের স্থলবাহিনী ও বিমান বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১০ হাজার।
গাজার মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বসবাস করে উত্তরাঞ্চলে। ৫ অক্টোবর বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকে খাবার, ওষুধ, জ্বালানি প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে ইতোমধ্যেই মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে উত্তর গাজায়।
বাসাল জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন, যারা পানি ও খাবারের সন্ধানে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “গত প্রায় দু’মাস ধরে উত্তর গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ইতোমধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থতি দেখা দিয়েছে। গণহত্যা, খাদ্যাভাব এবং লাগাতার হামলায় ভয়াবহ পরিস্থিতি পার করছেন উত্তর গাজার বাসিন্দারা।”
এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানিয়েছে, উত্তর গাজায় হামাস সংগঠিত হচ্ছে— এই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সর্বশেষ বিমান হামলাটি চালানো হয়েছিল।
২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। ভয়াবহ এ অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও এক লক্ষাধিক।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার আগ পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি