আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাসের (এইচআইভি) সহ-আবিষ্কারক ফরাসি ভাইরাসবিদ ল্যুক মন্টাগনিয়ার ৮৯ বছর বয়সে মারা গেছেন। এইডস আক্রান্ত হওয়ার ভাইরাস আলাদা করে শনাক্ত করার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৮ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
তাঁর এ কাজের জন্য বিশ্বজুড়ে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হন। তবে করোনাভাইরাস মহামারি ও অটিজম নিয়ে অবৈজ্ঞানিক মন্তব্য করে চরম সমালোচনার মুখেও পড়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ফ্রান্সসোইর বলেছে, গত মঙ্গলবার নুইলি-সুর-সাইনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ওই সময় তাঁর সন্তানরা পাশেই ছিলেন।
ফ্রান্সের দাতব্য সংস্থা প্যাসচার ইনস্টিটিউটে কাজ করার সময় ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে ভাইরাস নিয়ে তিনি প্রথম গবেষণা শুরু করেন।
রহস্যময় নতুন উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের কাছ থেকে কোষের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করতেন মন্টাগনিয়ার, তাঁর দল এবং ফ্যাঁসোইজ বারে-সিনুসি। পরে তারা একজন এইচআইভি আক্রান্তকে আলাদাভাবে শনাক্ত করেছিলেন। সে ব্যাপারে ১৯৮৩ সালে সায়েন্স সাময়িকীতে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ হয়।
সাময়িকীটির একই সংস্করণে মার্কিন বিজ্ঞানী রবার্ট গ্যালো একই ধরনের তথ্য-প্রমাণ দিয়ে আরেকটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তারা উভয়েই জানান, এইডসের কারণেই তারা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
যদিও, কে প্রথমে এইচআইভি আবিষ্কার করেছেন, তা নিয়ে বহু বছর ধরে বিতর্ক হয়েছে। ১৯৯১ সালে গ্যালো মেনে নেন, যে ভাইরাসের খোঁজ তিনি পেয়েছেন, তা প্যাসচার ইনস্টিটিউট থেকে এসেছে। ২০০২ সালে দুজন জনসম্মুখে একমত হয়েছেন, মন্টাগনিয়ার প্রথম এইচআইভির আবিষ্কার করেছেন। তবে এইডসে এইচআইভির প্রভাব প্রথম দেখিয়েছেন রবার্ট গ্যালো।
কিন্তু ২০০৮ সালে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সময় মন্টাগনিয়ার, ফ্যাঁসোইজ বারে-সিনুসিসহ সার্ভিকাল ক্যান্সার নিয়ে কাজের জন্য হেরাল্ড জুর হোসেনকে পুরস্কার দেওয়া হলেও, রবার্ট গ্যালোর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
ফ্রান্সে ১৯৩২ সালে জন্ম মন্টাগনিয়ারের। ১৯৫৫ সালে তিনি প্যারিসে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন। পরে ১৯৭২ সালে তিনি প্যাসচার ইনস্টিটিউটে চলে যান। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে তিনি সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কে যোগ দেন।
ফ্রান্সের গণমাধ্যমগুলো গত ৮ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছে, তিনি মারা গেছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানাল।
সূত্র : বিবিসি।