আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার অনুমতি দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই এ পদক্ষেপ নিলো ইউক্রেনীয় বাহিনী।
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার দিবাগত রাত ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে রাশিয়ার মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রায়ানস্কের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ৬টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে, তবে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের অবশিষ্টাংশের জেরে ব্রায়ানস্কের একটি সামরিক স্থাপনায় আগুন ধরে গিয়েছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১ হাজারতম দিন পূর্তি হয়েছে মঙ্গলবার। এই দিনেই প্রথমবারের মতো রাশিয়ার অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইউক্রেন। এর আগেও অবশ্য রুশ ভূখণ্ডে ড্রোন ও রকেট হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী, তবে সেগুলো ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তবর্তী এবং ইউক্রেনের যেসব এলাকা বর্তমানে রুশ দখলে রয়েছে— এমন অঞ্চল। রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা ঘটল এই প্রথম।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী— সবগুলোই যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অত্যাধুনিক এটিএসিএমএস ক্যাটাগরির। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির হওয়ায় এসব ক্ষেপণাস্ত্রকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগে ধ্বংস করা কঠিন।
হামলায় অবকাঠামোগত কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, এই হামলার ‘যথাযথ’ এবং ‘সঙ্গতিপূর্ণ’ জবাব দেবে রুশ বাহিনী।
এর আগে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করে যে তারা রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক এলাকায় একটি গোলাবারুদের গুদামে হামলা চালিয়েছে। তবে এই হামলায় এটিএসিএমএস ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করেনি তারা।
মঙ্গলবার সকালে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে কারচেভ শহরের একটি অস্ত্রাগারে হামলা করা হয়েছে। হামলার পর সেখানে ১২টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার একটি বিশেষ ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই ডিক্রিতে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে ইউক্রেনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে রুশ বাহিনী।