কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে একুশের চেতনায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে বিএনপি। আজ রোববার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘আজকে আমাদের গণতন্ত্র ভুলুণ্ঠিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, একুশের চেতনা সব কিছুই আজকে ভুলণ্ঠিত। আজকের দিনে আমাদের দৃপ্ত শপথ এই অনির্বাচিত, অবৈধ, স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।
বর্তমান সরকারের কোনো বৈধ্যতা নেই দাবি করে অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিও জানান আমান।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে মাফিয়া ও স্বৈরতন্ত্রের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। সরকার দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করছি।’ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সরকার কারাবন্দী করে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণতন্ত্রের মুক্ত ধারা বইয়ে দিয়েছে। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মানুষের কণ্ঠের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তারই সহধর্মিণী, বেগম খালেদা জিয়া ৯ বছর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করা হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে বন্দী করেছে কারণ তাকে বন্দী না করলে দিনের ভোট রাতে করা যেত না। একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন, মাফিয়াতন্ত্র, ক্যাসিনোতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যেত না। সেগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলেই আজ তিন বছর বেগম খালেদা জিয়া বন্দী।’
তিনি বলেন, ‘বায়ান্নর যে রক্তস্নাত চেতনা, সেদিনের যে আত্মত্যাগ সেটা আসলে ছিলো অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সেটা আজও আমাদের উদ্বুদ্ধ করে, আমাদের সাহসী করে। আজও আমাদের যে অধিকার হারানো, গণতন্ত্র হারানো, কথা বলার স্বাধীনতা হারানো সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য জোটবদ্ধ ভাবে সংগ্রাম করছি, কথা বলছি, আমরা মামালা, হামলা, গ্রেপ্তার, গুম ও খুনকে বরণ করে নিয়েও আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বায়ান্নর চেতনা আমাদের চেতনাকে শানিত করেছে, ধারালো করেছে বলেই আজও আমরা দৈত্যের ন্যায় একটা কতৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিএনপিসহ বিরোধী দল, বিরোধী মত এক কাতারে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করছি। এই চেতনার উৎসভূমি হচ্ছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন।’
এ সময় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, ইশরাক হোসেন, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল,ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আজ রোববার সকালে বলাকা সিনেমা হলের কাছে বিএনপির নেতাকর্মীরা সমবেত হয়ে প্রভাতফেরি করে আজিমপুরে ভাষা শহীদদের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন। এরপর ফাতেহা পাঠ করেন তারা। এরপর তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসে।