নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোববার বিকাল ৫টায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ সেশনে তৃতীয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে উপস্থিত হতে বলা হয়।
কিন্তু যবিপ্রবিতে পৌঁছতে ১২টা ৮ মিনিট বেজে যাওয়ায় ভর্তি হতে পারেননি নিপুণ বিশ্বাস নামে এক শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নে।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. তানভীর ইসলাম বলেন, রোববার বেলা ৩টার দিকে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করায় আমরা ৩য় ভর্তি বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করি। আমাদের উপাচার্য স্যারের নির্দেশনা ছিল ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সব ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য বিকাল ৫টায় একটি আসনের বিপরীতে অপেক্ষমাণ তালিকার তিনজনকে ডাকা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে উপস্থিত হওয়ার কথা বলা হলেও আমরা বেলা ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। বেলা ১২টা ১ মিনিটে একজন শিক্ষার্থীকে হাজির পেয়েছি। তাকে ভর্তি করে নিয়েছি। ওই শিক্ষার্থী (নিপুণ) বেলা দেড়টার দিকে হাজির হয়েছে। তখন আর তাকে ভর্তি করার সুযোগ ছিল না।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিপুণ বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, রোববার বিকালে ওয়েবসাইটের নোটিশে তৃতীয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমার কোনো স্মার্টফোন নেই যার কারণে আমি ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারিনি। কিন্তু আমার মোবাইল নম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোনো কল বা মেসেজ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা দেওয়া হয়নি। মাঝরাতে আমার একজন বড় ভাই আমাকে ফোন করে ভর্তির বিষয়ে জানালে আমি তাৎক্ষণিকভাবে ধার করে ২৩ হাজার টাকা জোগাড় করি।
তিনি বলেন, এরপর নির্দিষ্ট সময়ে আসার জন্য মাইক্রোবাস ঠিক করি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে। কিন্তু যশোর থেকে নীলফামারীর দূরত্ব অনেক হওয়ায় এবং রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছতে আমার বেলা ১২টা ৮ মিনিট বেজে যায়। এর মধ্যে ১০টার দিকে আমার বিষয়ে একজন বড়ভাই ডিন স্যারের সঙ্গে এ সমস্যার বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু আমি আসার পরে জানতে পারি মেরিট লিস্টে আমি প্রথমে থাকার পরেও তৃতীয় সিরিয়ালে থাকা শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। এরপর আমি অনেক অনুনয়-বিনয় করলেও তারা আমাকে ভর্তি নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমি কাজ করে হলেও এই টাকা জোগাড় করতে পারব কিন্তু আমি আমার বাবা-মাকে কী জবাব দেব? আমার বাসা দূরে হওয়ার জন্য আজ আমি সময়মতো আসতে পারিনি। যদি সময়সীমা বাড়ানো হতো তাহলে আমি সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারতাম। তাছাড়াও আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মেসেজও দেওয়া হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওয়েটিং লিস্টে থাকায় আমি মেসেজ পেয়েছি কিন্তু এখানকার প্রশাসন কোনো মেসেজ দেয়নি। আমাকে যদি আগে থেকে মেসেজ দেওয়া হতো অথবা নোটিশের পরের দিনই সময় না দিয়ে একটা দিন পরে দেওয়া হতো তাহলে আমি সঠিক সময়ে এসে ভর্তি হতে পারতাম।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. তানভীর ইসলাম আরও বলেন, ছেলেটির বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই। নিয়মের মধ্যে থেকেই আমাদের অনেক সময় কঠিন সিদ্ধান্তে যেতে হয়। যে ছেলেটি ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তার বাড়ি বগুড়ায়। সেও দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান বলে জেনেছি।
বিএসডি/ এলএর