নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার লন্ডন যাচ্ছেন। এদিন রাত ১০টায় কাতারের একটি বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে তার। সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর আরোগ্য কামনা করে ফেসবুক একটি পোস্ট দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
সোমবার বেলা ১২টায় দেওয়া পোস্টে স্মৃতিচারণ করে বলেন, বেশ কিছুদিন আগে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেছিলাম। আলাপকালে শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটা খারাপ শব্দও উচ্চারণ করেননি খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথোপকথন নিয়ে আসিফ নজরুলের দেওয় পোস্টটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
চিকিৎসার জন্য নভেম্বরে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেরকম একটা সময়ে আমি উনার সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করতে যাই। একান্তে কথা হয় কিছুক্ষণ উনার বাসভবনে। বেগম জিয়া গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য কামনা করেন। জানান সবসময় তিনি খবর রাখেন দেশের।
আমি উনার স্বাস্থ্যের কথা, হাসিনা শাসনামলের দুঃসহ সময়ের কথা জানতে চাই। লক্ষ্য করি তিনি একবারও শেখ হাসিনার নাম নিচ্ছেন না। অবশেষে সরাসরি জানতে চাই: এতো সাফার করলেন আপনি, শেখ হাসিনার ওপর রাগ লাগে না আপনার? তিনি একটু নীরব থাকেন। তারপর ম্লান কণ্ঠে বলেন, ‘রাগ করে কী করবো বলেন! আল্লাহ-র কাছে বলি।’
‘আমি অবাকই হই। পনেরটা বছর শেখ হাসিনা কী জঘন্য ও অশ্লীল মিথ্যাচার আর নির্মম নির্যাতন করেছেন বেগম জিয়া’র প্রতি এবং একইসঙ্গে উনার দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে! অথচ একটা খারাপ শব্দও তিনি উচ্চারণ করলেন না শেখ হাসিনাকে নিয়ে।’
‘আগামীকাল বেগম জিয়া চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন লন্ডনে। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন দেশে। আবার যেন ভূমিকা রাখতে পারেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র আর অগ্রগতি বিনির্মাণে।’
এদিকে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন জানান, আজকে সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টায় খালেদা জিয়াকে বহন করার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসবে। আর লন্ডন বিমান বন্দরে খালেদা জিয়াকে রিসিভ করবেন তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্ত্রী ড. জোয়াবেদা রহমান এবং লন্ডন বিএনপির ২ জন নেতা। আর ঢাকা থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে চিকিৎসকদের পাশাপাশি তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি যাবেন।
ডা. জাহিদ আরও বলেন, লন্ডন ক্লিনিক নামে একটি পুরানো হাসপাতাল আছে, সেখানে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করানো হবে এবং চিকিৎসা চলবে। এই হাসপাতালে ম্যাডামের পরীক্ষা-নীরিক্ষা হবে। তাদের পরামর্শে ম্যাডামের চিকিৎসার পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকদের পরামর্শ ও রিভিউ করার পর খালেদা জিয়ার পরবর্তী চিকিৎসা কী ধরনের হবে তা বলা যাবে বলেও জানান ডা. জাহিদ।